গত আট মাসের মধ্যে এই প্রথমবার অক্টোবর মাসে চীনের রপ্তানি কমেছে। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বৈঠকের কয়েক সপ্তাহ আগে বাণিজ্য উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়ায় এই পতন ঘটেছে।
বছরের হিসেবে অক্টোবর মাসে চীনের মোট চালান বা রপ্তানি ১ দশমিক ১ শতাংশ কমেছে; যেখানে গণমাধ্যমের পূর্বাভাস ছিল রপ্তানি ২ দশমিক ৯ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।
শনিবার (৮ নভেম্বর) এএফপির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
একই মাসে আমদানি বেড়েছে ১ দশমিক ০ শতাংশ, যা সেপ্টেম্বরের পরিসংখ্যানের তুলনায় এবং গণমাধ্যমের ২ দশমিক ৭ শতাংশ বৃদ্ধির পূর্বাভাস থেকে বেশ কম। চীনের জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব কাস্টমস এই তথ্য প্রকাশ করেছে।
অক্টোবরের শেষে দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বৈঠকের পর দুই দেশের বাণিজ্য যুদ্ধে একটি বিরতি এসেছে।
এর আগে বেইজিং গত মাসে দুর্লভ ধাতু প্রযুক্তি রপ্তানির ওপর নতুন বিধিনিষেধ ঘোষণা করেছিল। এই খাতে চীনের বিশ্বব্যাপী আধিপত্য রয়েছে। এই দুর্লভ ধাতুগুলো প্রতিরক্ষা ও গাড়ি প্রস্তুতকারকদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ট্রাম্প এর জবাবে চীনা পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন। তবে গত মাসে দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রেসিডেন্ট শি এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বৈঠকের পর সেই হুমকি প্রত্যাহার করা হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট এই বৈঠককে ‘বিরাট সাফল্য’ বলেও অভিহিত করেন।
ওয়াশিংটন চীনা পণ্যের ওপর আরোপিত শুল্ক অর্ধেক কমিয়ে ১০ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। জবাবে বেইজিং দুর্লভ ধাতু রপ্তানির ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা শিথিল করেছে, যা ইউরোপীয় ব্যবসায়ীদের জন্যও স্বস্তি এনে দিয়েছে।
এছাড়াও, চীন মার্কিন কৃষকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সয়াবিনসহ অন্যান্য কৃষি পণ্যের ওপর থেকে অতিরিক্ত শুল্ক প্রত্যাহার করে নিয়েছে।
কাস্টমসের তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবর মাসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে চীনের আমদানি মাসিক হিসেবে ১১ দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে, অন্যদিকে চীনের রপ্তানি ১ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছে।
পিনপয়েন্ট অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের অর্থনীতিবিদ ঝিওয়েই ঝাং এক নোটে বলেছেন, চীনা রপ্তানিকারকরা যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চ শুল্ক এড়ানোর জন্য তাদের বাণিজ্যকে আগেভাগেই সম্পন্ন করার চেষ্টা করছিলেন।
ঝাং বলেন, যেহেতু বাণিজ্য যুদ্ধ এক বছরের জন্য স্থগিত হয়েছে, এখন রপ্তানি স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, এখন যেহেতু রপ্তানির গতি কমে যাচ্ছে, চীনের অভ্যন্তরীণ চাহিদার দিকে আরও বেশি মনোযোগ দেওয়া দরকার।
অর্থসূচক/



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.