পাখি খাদ্যের আড়ালে পাকিস্তান থেকে যা আসছে চট্টগ্রাম বন্দরে

বার্ড ফুডের (পাখির খাদ্যের) আড়ালে মাদকপণ্য আমদানির অভিযোগে চট্টগ্রাম বন্দরে ২৪ হাজার ৯৬০ কেজি পপি সিডের একটি চালান জব্দ করেছে কাস্টমস। চালানটি পাকিস্তান থেকে আমদানি করা হয়। চট্টগ্রাম কাস্টমসের অডিট, ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্স (এআইআর) শাখা চালানটি আটক করে।

বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় চট্টগ্রাম কাস্টমস।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে সাড়ে ৬ কোটি টাকার পণ্য মাত্র ৩০ লাখ টাকায় ঘোষণা দিয়ে আমদানি করা হয়। চট্টগ্রাম কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার (প্রিভেন্টিভ) এইচ এম কবির বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, গত ৯ অক্টোবর বার্ড ফুড হিসেবে দুই কনটেইনারে ৩২ হাজার ১০ কেজি পণ্যের একটি চালান চট্টগ্রাম বন্দরে আসে। পরে সেটি খালাসের জন্য বেসরকারি অফডক ছাবের আহমেদ টিম্বার কোম্পানি লিমিটেডের ডিপোতে নেওয়া হয়। চালানটির আমদানিকারক চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালি থানার কোরবানিগঞ্জ এলাকার মেসার্স আদিব ট্রেডিং।

চালানটি খালাসের জন্য নগরীর হালিশহরের শান্তিবাগ এলাকার এম এইচ ট্রেডিং কাস্টমস সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট লিমিটেড বার্ড ফুড ঘোষণা দিয়ে গত ১৪ অক্টোবর কাস্টমসের অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেমে বিল অব এন্ট্রি দাখিল করে। পরে চালানটির উৎস, রপ্তানিকারক ও আমদানিকারকের ব্যবসার ধরণ পর্যালোচনা করে মিথ্যা ঘোষণার সন্দেহে চালানটির খালাস স্থগিত করে লক করে দেওয়া হয়।

গত ২২ অক্টোবর ডিপো কর্তৃপক্ষ, সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠানের উপস্থিতিতে চালানটির কায়িক পরীক্ষা করে কাস্টমসের এআইআর শাখা। এতে কনটেইনার দুটিতে ৭ হাজার ২০০ কেজি বার্ড ফুড এবং ২৪ হাজার ৯৬০ কেজি পপি সিড পাওয়া যায়।

এরপর পণ্য দুটির নমুনা সংগ্রহ করে চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ দপ্তর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যানোপ্রযুক্তি সেন্টার এবং খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে ভৌত ও রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। পরীক্ষায় ২৪ হাজার ৯৬০ কেজির চালানটি পপি সিড হিসেবে চিহ্নিত হয়।

কায়িক পরীক্ষায় অংশ নেওয়া কাস্টমস কর্মকর্তারা জানান, কনটেইনারে মুখে বার্ড ফুড দিয়ে ভেতরে পপি সিড ঢেকে রেখে কৌশলে আমদানি করা হয়। পপি সিড মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ অনুসারে ‘ক’ শ্রেণির মাদক হিসেবে বিবেচিত এবং আমদানি নীতি আদেশ ২০২১–২০২৪ অনুসারে এটি আমদানি নিষিদ্ধ পণ্য।

তবে দেশে পপি সিডকে ‘পোস্ত দানা’ নামে রান্নায় ব্যবহৃত একটি মসলা হিসেবে পরিচিত।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ঘোষিত মূল্য ছিল ৩০ লাখ ২ হাজার ৪৮২ টাকা, কিন্তু কায়িক পরীক্ষণে প্রাপ্ত পণ্যের বাজারমূল্য প্রায় ৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এসব পণ্য আমদানিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে কাস্টমসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

অর্থসূচক/

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.