কিছু মার্কিন কৃষিপণ্যে শুল্ক প্রত্যাহার করলো চীন

যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি কৃষিপণ্যের ওপর আরোপিত কিছু প্রতিশোধমূলক শুল্ক স্থগিত করেছে চীন। তবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা সয়াবিনের ওপর ১৩ শতাংশ শুল্ক বহাল থাকায় এই পণ্য এখনও ব্যয়বহুল রয়ে গেছে। বুধবার দেশটির রাষ্ট্রীয় পরিষদের (ক্যাবিনেট) শুল্ক কমিশন এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে।

বুধবার (৫ নভেম্বর) ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

চীনের ঘোষণায় বলা হয়েছে, ১০ নভেম্বর থেকে কিছু মার্কিন কৃষিপণ্যের ওপর আরোপিত সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহার করা হবে। তবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের লিবারেশন ডে শুল্কের জবাবে আরোপ করা ১০ শতাংশ শুল্ক বহাল থাকবে।

গত সপ্তাহে দক্ষিণ কোরিয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বৈঠকের পর এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এতে বিনিয়োগকারীরা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। কারণ বিশ্বের দুই বৃহৎ অর্থনীতি নতুন করে বাণিজ্যযুদ্ধের ঝুঁকি এড়াতে আগ্রহী বলে মনে হয়েছে।

বেইজিংভিত্তিক থিংক ট্যাংক ট্রিভিয়াম চায়নার পরিচালক ইভেন রজার্স পে বলেন, এটি ইঙ্গিত দিচ্ছে যে দুই পক্ষ দ্রুত চুক্তি বাস্তবায়নের দিকে এগোচ্ছে। এর মানে, উভয় পক্ষের অবস্থান এখন একমুখী।

তবে শুল্ক কমানোর পরও চীনা ক্রেতাদের জন্য মার্কিন সয়াবিন প্রতিযোগিতামূলক নয়। এক আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংস্থার এক কর্মকর্তা বলেন, এই পরিবর্তনের পরও চীনের বাজারে মার্কিন সয়াবিনের চাহিদা ফেরার সম্ভাবনা নেই। ব্রাজিল এখন অনেক সস্তা।

যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউজের তথ্যমতে, চীন চলতি বছরের শেষ দুই মাসে কমপক্ষে ১ কোটি ২০ লাখ মেট্রিক টন এবং আগামী তিন বছরে প্রতি বছর ২ কোটি ৫০ লাখ টন মার্কিন সয়াবিন কিনবে। তবে বেইজিং এখনও এই তথ্য নিশ্চিত করেনি।

অন্যদিকে, দক্ষিণ আমেরিকায় দাম কমায় চীনা আমদানিকারকেরা সম্প্রতি ব্রাজিল থেকে ২০টি কার্গো সয়াবিন কিনেছে। ডিসেম্বর চালানের জন্য ব্রাজিলীয় সয়াবিনের দাম প্রতি বুশেল ২ দশমিক ২৫ থেকে ২ দশমিক ৩০ ডলার প্রিমিয়ামে অফার করা হচ্ছে, যেখানে মার্কিন উপসাগরীয় বন্দর থেকে চালানের দাম ২ দশমিক ৪০ ডলার।

২০২৪ সালে চীনের সয়াবিন আমদানির ২০ শতাংশ এসেছিল যুক্তরাষ্ট্র থেকে। ২০১৬ সালে যা ছিল ৪১ শতাংশ। উচ্চ শুল্কের কারণে এ বছর চীন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করেনি। ফলে মার্কিন কৃষকদের রফতানি আয় কয়েক বিলিয়ন ডলার কমেছে।

মঙ্গলবার এক মার্কিন কৃষি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে চীনের বাণিজ্য আলোচক লি চেংগ্যাং বলেন, দুই দেশের কৃষি বাণিজ্যের ওঠানামা মূলত যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতির ফল। চীন ও যুক্তরাষ্ট্র গুরুত্বপূর্ণ কৃষি বাণিজ্য অংশীদার। আমরা চাই, ওয়াশিংটন সহযোগিতার জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করুক।

চীনের ক্যাবিনেট জানিয়েছে, এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর আরোপিত ২৪ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক এক বছরের জন্য স্থগিত থাকবে। পাশাপাশি কিছু অশুল্ক প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ, যেমন রফতানি নিয়ন্ত্রণ নীতি, একই মেয়াদে প্রত্যাহার বা স্থগিত করা হবে বলে দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

অর্থসূচক/

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.