নেপালের দুর্গম হিমালয় অঞ্চলে কয়েক দিনের তীব্র তুষারঝড় ও তুষারধসে অন্তত ৯ জন পর্বতারোহী নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে পাঁচজন ইতালীয় নাগরিক বলে মঙ্গলবার নেপালের সরকারি কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন।
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, পৃথক দুটি দুর্ঘটনায় এই প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। সোমবার চীনের সীমান্তবর্তী নেপালের মধ্যাঞ্চলীয় ইয়ালুং রি পর্বতে (উচ্চতা ১৮,৪৭১ ফুট) ১২ জনের একটি অভিযাত্রী দল তুষারধসের কবলে পড়ে।
নেপালের ড্রিমার্স ডেস্টিনেশন নামের অভিযাত্রী সংস্থার প্রতিনিধি ফুরবা তেনজিং শেরপা বলেন, ওই দুর্ঘটনায় সাতজন নিহত হয়েছেন—তাদের মধ্যে তিনজন ইতালীয়, দুজন নেপালি, একজন জার্মান ও একজন ফরাসি পর্বতারোহী।
তিনি আরও জানান, দলের বাকি সদস্যদের মঙ্গলবার সকালে উদ্ধার করে কাঠমান্ডুতে নেওয়া হয়েছে। উদ্ধারকৃতদের মধ্যে দু’জন ফরাসি ও দু’জন নেপালি রয়েছেন।
এর আগে পশ্চিম নেপালের পানবারি পর্বতে (উচ্চতা ২২,৫৯৫ ফুট) আরোহণের চেষ্টাকালে দুই ইতালীয় পর্বতারোহী আলেসান্দ্রো কাপুতো ও স্তেফানো ফাররোনাতো প্রাণ হারান। শুক্রবার থেকে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল, এবং মঙ্গলবার ইতালির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তারা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৫ হাজার মিটার উচ্চতায় তীব্র তুষারপাতের মধ্যে আটকা পড়েছিলেন।
বিশ্বের ১০টি সর্বোচ্চ পর্বতের মধ্যে ৮টি নেপালে অবস্থিত, যার মধ্যে মাউন্ট এভারেস্ট অন্যতম। প্রতি বছর শত শত পর্বতারোহী ও ট্রেকার দেশটিতে অভিযান পরিচালনা করে। শরৎকালকে হিমালয় অভিযানের জন্য দ্বিতীয় জনপ্রিয় মৌসুম হিসেবে ধরা হয়, যদিও এই সময় আবহাওয়া ঠান্ডা ও পথ বরফে ঢাকা থাকে।
গত সপ্তাহে সাইক্লোন মন্থার প্রভাবে নেপালে ভারী বৃষ্টি ও তুষারপাত হয়, এতে অনেক ট্রেকার জনপ্রিয় রুটগুলোতে আটকা পড়েন।
হিমালয়ান ডেটাবেস অনুযায়ী, ১৯৫০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত নেপালের বিভিন্ন পর্বতে দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ১,০৯৩ জন পর্বতারোহী প্রাণ হারিয়েছেন, যার এক-তৃতীয়াংশই তুষারধসে মারা গেছেন।
অর্থসূচক/



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.