অনিয়মিত অভিবাসন ঠেকাতে নানা ধরনের কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে নর্ডিক দেশ ফিনল্যান্ড। এর ফলে বাড়ছে প্রত্যাবাসনের সংখ্যা। সরকারের এমন কঠোরতায় আতঙ্কে অনেক অনিয়মিত অভিবাসী।
নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হলে জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তাদের কেউ কেউ।
রাজধানী হেলসিঙ্কির ‘হাউস অব দ্য হোপ’ নামের ডে সেন্টারটিতে নথিবিহীন অভিবাসীরা আইনি সহায়তা, চিকিৎসা এবং প্রায় প্রতিদিনই দুপুরের খাবার পেয়ে থাকেন।
একটি খ্রিস্টান বেসরকারি সংস্থা ও স্বেচ্ছাসেবীদের মাধ্যমে পরিচালিত এই সেন্টারটি মূলত যেসব আশ্রয়প্রার্থীর আবেদন নাকচ করা হয়েছে এবং যারা নথি ছাড়াই ফিনল্যান্ডে বসবাস করছেন তাদের সহায়তা দেয়।
“আমার পরিস্থিতি খুবই খারাপ,” মরক্কোর ৫০ বছর বয়সী এক নারী অভিবাসী জানান বার্তাসংস্থা এএফপিকে। ২০২৪ সালের শুরুর দিকে ফিনল্যান্ডে এসে সমাজকর্মী হিসেবে চাকরির চেষ্টা করছিলেন তিনি, কিন্তু ৯০ দিনের মধ্যে চাকরি না পাওয়ায় এখন তার অবস্থান অনিশ্চিত।
ফিনল্যান্ডের আইন অনুযায়ী, রেসিডেন্স পারমিট ছাড়া তৃতীয় দেশের নাগরিকেরা দেশটিতে ৯০ দিন অবস্থান করতে পারেন। নথিবিহীন অবস্থায় চাকরির আবেদনও করা যায় না—আবেদন করতে হলে নিজ দেশে ফিরে যেতে হয়।
ওই নারী অভিবাসী বলেন, “আমি মরক্কো ফিরে যেতে পারি না। কারণ আমার সাবেক স্বামী যদি জানতে পারেন আমি ফিরে এসেছি, তাহলে সে বেপরোয়া হয়ে উঠবে।” তবে তাকে নভেম্বরে ফিনল্যান্ড ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
‘ডে অব দ্য হোপ’-এর প্রজেক্ট ম্যানেজার আনে হামাদা জানান, ২০২৩ সালে ডানপন্থি সরকার ক্ষমতায় আসার পর অভিবাসন আইন কঠোর হয়েছে, ফলে অনিয়মিত অভিবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক বেড়েছে।
তিনি বলেন, “অনেকেই ইতোমধ্যে দুরবস্থায় রয়েছেন এবং নিজ দেশে ফেরত যাওয়ার বিষয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।”
ফিনিশ পুলিশের তথ্যানুযায়ী, জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দুই হাজার ৭০ জন আশ্রয়প্রার্থীকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে—যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩০ শতাংশ বেশি।
পুলিশের চিফ সুপারিনটেন্ডেন্ট ইয়ানে লেপসু বলেন, “যদি দেখা যায় কোনো বিদেশির ফিনল্যান্ডে থাকার অধিকার নেই, তাহলে তাকে ফিনল্যান্ড ও শেঙ্গেন অঞ্চল থেকে ফেরত পাঠানোর জন্য সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ধারণা করা হচ্ছে, ফিনল্যান্ডে বর্তমানে অনিবন্ধিত অভিবাসীর সংখ্যা সাড়ে তিন হাজার থেকে পাঁচ হাজারের মধ্যে।
অর্থসূচক/
			
						

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.