তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেছেন, বিগত সরকারের সময় যারাই দেশের ছাত্র-জনতাকে গুম, খুন বা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, পর্যায়ক্রমে তাদের সকলের বিচার করা হবে। আগামী সাপ্তাহে ফ্যাসিস্ট, খুনী শেখ হাসিনার বিচার হবে এবং আমরা একটি রায় পাবো। এতে জুলাই শহীদদের পরিবার, যারা অবর্ণনীয় কষ্টের ভেতর দিয়ে যাচ্ছেন, তাদের ব্যথা কিছুটা হলেও লাঘব হবে।
মঙ্গলবার লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে জুলাই শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি একথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, অঙ্গীকার নিয়ে এসেছিলাম যে বিচারের কাজ শুরু করবো, আমরা সেই বিচারের কাজ শুরু করতে পেরেছি। যারা দেশের ছাত্র-জনতা হত্যা ও গুমের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তাদের সবারই বিচার হবে।
তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনাসহ অনেকের বিচার কাজই ট্রাইব্যুনালে চলমান রয়েছে। পরবর্তীতে জনগণের ভোটে যে সরকার নির্বাচিত হবেন, তারা এ বিচার কাজকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাবেন।
মাহফুজ আলম বলেন, আমার এলাকা রামগঞ্জ, তথা লক্ষ্মীপুরে মাদক নিরাময়কেন্দ্র, নার্সিং কলেজ স্থাপন, সদর হাসপাতাল উন্নতিকরণ ও শিক্ষা ব্যবস্থাসহ অনেকগুলো কমিশন সংস্কারের প্রস্তাবনা প্রস্তুত করেছে। খুব শিগগিরই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্যের ভিত্তিতে যে সংস্কার না করলেই নয়, নির্বাচনের পূর্বে আমরা সেসব সংস্কার করতে চাই।
মাহফুজ আলম আরো বলেন, শেখ হাসিনা যে প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে, যে প্রতিষ্ঠানগুলো হাসিনাকে টিকিয়ে রেখেছিলো- সেই প্রতিষ্ঠানগুলোকে একই রকম রেখে আমরা নির্বাচন করতে পারি না। নির্বাচন করার আগে অবশ্যই হাসিনার দালালদেরকে উৎখাত করে এবং খুনি হাসিনাসহ তার দোসরদের বিচার করে আমাদের নির্বাচনের দিকে এগোতে হবে।
উপদেষ্টা বলেন, সংস্কার কাজে আমরা অনেক দূর অগ্রসর হয়েছি। রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যমত হয়ে জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেছেন— এটা বাংলাদেশের জন্য বড় একটি প্রাপ্তি। এর ভেতর দিয়ে বাংলাদেশ একটা নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করলো। জুলাই সনদ ও সংস্কার কার্যক্রমের মাধ্যমে পরবর্তীতে যে নির্বাচিত সরকার আসবে, তারা যদি সংস্কার কাজগুলোকে যথাযথভাবে করতে পারে তাহলে যে নতুন বাংলাদেশ আমরা চেয়েছিলাম, সে রকম একটা বাংলাদেশ দেখতে পাবো। যেখানে সবার ক্ষমতার ভারসাম্য থাকবে, বিচারে আইনের শাসন থাকবে, সুবিচার থাকবে। গুম খুন আর ফেরত আসবে না।
রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে মাহফুজ বলেন, আসুন, বাংলাদেশ-পন্থার মধ্য দিয়ে আমরা যারা ফ্যাসিবাদ-বিরোধী শক্তি আছি, ঐক্যবদ্ধ হই। সংস্কারগুলো করার জন্য সরকারকে সহযোগিতা করুন। প্রয়োজনে আমরা আবার লড়াই করব, শহীদদের পথ অনুসরণ করে আমরা শাহাদাতের পথ বেছে নেব। শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্ট শাসন-ব্যবস্থা উৎখাত করে সন্তুষ্ট হলে চলবে না, বরং আওয়ামী লীগ ফ্যাসিজমের যত বৈশিষ্ট্য বিভিন্ন প্রান্তে, প্রশাসনে, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে রয়ে গেছে, তাদেরকেও বিচারের আওতায় আনতে হবে।



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.