সুগন্ধি চাল রপ্তানির সময় বাড়ল ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত

সুগন্ধি চাল রপ্তানির সময়সীমা ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে বাড়িয়ে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। নতুন বর্ধিত সময়ের মধ্যে ৫০টি প্রতিষ্ঠান চাল রপ্তানি করতে পারবে। গত সোমবার (২৭ অক্টোবর) মন্ত্রণালয়ের রপ্তানি-২ শাখার উপসচিব এস এইচ এম মাগফুরুল হাসান আব্বাসী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

চিঠির শর্ত অনুযায়ী, অনুমোদিত পরিমাণের চেয়ে বেশি চাল রপ্তানি করা যাবে না এবং সর্বনিম্ন রপ্তানিমূল্য প্রতি কেজি এক দশমিক ৬০ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া এই অনুমতি হস্তান্তরযোগ্য নয়—অর্থাৎ অনুমোদিত রপ্তানিকারক কোনোভাবেই নিজে রপ্তানি না করে সাব-কন্ট্রাক্ট দিতে পারবে না।

আরও বলা হয়েছে, শুল্ক কর্তৃপক্ষ রপ্তানিযোগ্য পণ্যের যথাযথ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে। প্রতিটি চালান জাহাজীকরণ শেষে রপ্তানি সংক্রান্ত কাগজপত্র রপ্তানি-২ শাখায় পাঠাতে হবে। পরবর্তী আবেদনের ক্ষেত্রে আগের অনুমোদিত পরিমাণ থেকে প্রকৃত রপ্তানির তথ্যপ্রমাণসহ আবেদন করতে হবে। সরকার প্রয়োজনে যেকোনো সময় রপ্তানি অনুমতি বাতিল করতে পারবে।

এর আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ৫২ প্রতিষ্ঠানকে ৫ হাজার ৮০০ টন সুগন্ধি চাল রপ্তানির অনুমতি দিয়ে গত ২৮ মে পরিপত্র জারি করে। তখন বাণিজ্যসচিব মো. মাহবুবুর রহমান জানান, রপ্তানিকারকদের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে এ চাল রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়।

এর আগে গত ৮ এপ্রিল ১৩৩ প্রতিষ্ঠানকে ১৮ হাজার ১৫০ টন সুগন্ধি চাল রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছিল মন্ত্রণালয়। দুই দফা মিলিয়ে অনুমোদনের পরিমাণ দাঁড়ায় ২৩ হাজার ৯৫০ টন।

বাংলাদেশ থেকে ২০০৯-১০ অর্থবছরে সুগন্ধি চাল রপ্তানি শুরু হয়। ২০১২ সালে এসে প্রথমবার চাল রপ্তানি বন্ধ করা হয়, পরে কিছু অনুমতি দিলেও ২০১৩ সালের অক্টোবর মাসে সরকার পুনরায় রপ্তানি বন্ধ করে। প্রথম বছর ৬৬৩ টন সুগন্ধি চাল রপ্তানি হয়েছিল, যা পরে বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১০ হাজার ৮৭৯ টনে উন্নীত হয়।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে রপ্তানি হয়েছিল ৮৬ লাখ মার্কিন ডলার, ২০২০-২১ অর্থবছরে ৮৫ লাখ ডলার, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৫১ লাখ ডলারের সুগন্ধি চাল রপ্তানি হয়।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, দেশে বছরে গড়ে ১৮-২০ লাখ টন সুগন্ধি চাল উৎপাদন হয়, আর রপ্তানি হয় মাত্র ১০ হাজার টন, যা উৎপাদনের তুলনায় অতি সামান্য। ফলে খাদ্য নিরাপত্তায় কোনো ঝুঁকি নেই বলে জানিয়েছে রপ্তানিকারকরা।

এ পর্যন্ত বাংলাদেশের সুগন্ধি চাল রপ্তানি হয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ব্রুনেই, দক্ষিণ কোরিয়াসহ ১৩০টির বেশি দেশে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তালিকায় রপ্তানিযোগ্য সুগন্ধি চালের জাতগুলো হলো- কালিজিরা, কালিজিরা টিপিএল-৬২, চিনিগুঁড়া, চিনি আতপ, চিনি কানাই, বাদশাভোগ, কাটারিভোগ, মদনভোগ, রাঁধুনিপাগল, বাঁশফুল, জটাবাঁশফুল, বিন্নাফুল, তুলসীমালা, তুলসী আতপ, তুলসী মণি, মধুমালা, খোরমা, সাককুর খোরমা, নুনিয়া, পশুশাইল, দুলাভোগ ইত্যাদি।

অর্থসূচক/

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.