মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোকে দায়িত্ব নিতে হবে: হামাস

গাজা উপত্যকায় ইসরাইল সরকারের সাম্প্রতিক আগ্রাসনকে “যুদ্ধবিরতি চুক্তির স্পষ্ট লঙ্ঘন এবং বলপ্রয়োগের মাধ্যমে নতুন সমীকরণ চাপিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা” বলে অভিহিত করে একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়েছে প্রতিরোধ আন্দোলন (হামাস)।

বিবৃতিতে মার্কিন সরকারের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনি জনগণের রক্তপাতের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে। সেই সাথে চুক্তির নিশ্চয়তা প্রদানকারী মধ্যস্থতাকারীদের এই “সামরিক চরমপন্থার” জন্য তাদের দায় স্বীকার করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

আল-আলম নিউজ নেটওয়ার্কের বরাত দিয়ে পার্সটুডে জানিয়েছে, প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের মিডিয়া অফিস থেকে দেওয়া ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গাজায় আমাদের জনগণের বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতক আগ্রাসন বৃদ্ধি ইহুদিবাদী সরকারের যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে দুর্বল করা এবং বলপ্রয়োগের মাধ্যমে নতুন বাস্তবতা চাপিয়ে দেওয়ার স্পষ্ট অভিপ্রায়ের প্রমাণ। এই পদক্ষেপ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতায় পরিচালিত হচ্ছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। নেতানিয়াহুর ফ্যাসিস্ট মন্ত্রিসভাকে আমেরিকা রাজনৈতিক সমর্থন দিয়ে গাজায় অপরাধ অব্যাহত রাখার পথ সুগম করেছে বলেও বিবৃতিতে বলা হয়েছে।

এই বিবৃতিতে হামাস ওয়াশিংটনের অবস্থানের তীব্র নিন্দা জানিয়ে আরও বলেছে, দখলদার সরকারের প্রতি মার্কিন সরকারের পক্ষপাতদুষ্ট অবস্থানের অর্থ হল ফিলিস্তিনি শিশু ও নারীদের রক্তপাত এবং সরাসরি আগ্রাসন অব্যাহত রাখার ব্যাপারে উৎসাহিত ও সহযোগিতা করা।

হামাস আরও বলেছে, দখলদার সরকার এই বিপজ্জনক উত্তেজনা বৃদ্ধি এবং এ সংক্রান্ত রাজনৈতিক পরিণতির জন্য সম্পূর্ণরূপে দায়ী। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে, দখলদার সরকার ট্রাম্পের পরিকল্পনা এবং যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে ব্যর্থ করে দেওয়ার চেষ্টা করছে। তবে, প্রতিরোধ আন্দোলন দায়িত্বের সাথে চুক্তি মেনে চলে এবং তারা শত্রুকে বলপ্রয়োগ ও রক্তপাতের মাধ্যমে নতুন বাস্তবতা চাপিয়ে দিতে দেবে না বলে বিবৃতিতে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এই আন্দোলন চুক্তির মধ্যস্থতাকারী এবং জামিনদারদের ইসরাইলি “সামরিক চরমপন্থার” জন্য নিজেদের দায়িত্ব স্বীকার করার এবং ইহুদিবাদী সরকারের অপরাধ অবিলম্বে বন্ধ করার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি চুক্তির বিধানগুলো সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়ন করতে বাধ্য করার আহ্বান জানিয়েছে।

হামাস স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেছে, ফিলিস্তিনি শিশু ও নারীদের রক্ত মূল্যহীন নয় এবং ফিলিস্তিনি জনগণের বৈধ অধিকার আদায় না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ অব্যাহত থাকবে।

একই সময়ে, হামাসের মুখপাত্র হাজেম কাসেম আল জাজিরার সাথে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, যুদ্ধ শেষ করার চুক্তি সত্ত্বেও দখলদার সরকার গতরাতে একটি বড় অপরাধ করেছে; এই আচরণ মধ্যস্থতাকারী এবং চুক্তির নিশ্চয়তা প্রদানকারী দেশগুলোর প্রতি সরকারের সম্পূর্ণ অসম্মান প্রদর্শনেরই প্রমাণ।” তিনি শার্মুশশেখ বৈঠকে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোকে “তাদের দায়িত্ব পালন করা এবং দখলদার সরকারকে বারবার চুক্তি লঙ্ঘন করা থেকে বিরত রাখার জন্য তাৎক্ষণিক এবং কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের” আহ্বান জানিয়েছেন। মঙ্গলবার দক্ষিণ গাজা উপত্যকার রাফাহ শহরে ইসরাইল তার সৈন্যদের ওপর গুলি চালানোর অজুহাতে গাজার বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক আক্রমণ চালিয়ে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করার পর হামাসের দফতর থেকে এই বিবৃতি দেওয়া হয়। ইসরাইলি এই আগ্রাসনে কয়েক ডজন নিহত এবং আহত হয়েছে। হতাহতদের বেশিরভাগই শিশু এবং মহিলা। পার্সটুডে

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.