ইউক্রেনে সামরিক অভিযান ইস্যুতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নিজের শর্তে অটল থাকায় হতাশ হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তাই রাশিয়াকে যুদ্ধবিরতিতে আসতে বাধ্য করতে দেশটির দুই বৃহত্তম তেল কোম্পানি রোসনেফ্ট ও লুকোইল-এর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি মন্ত্রণালয়।
গতকাল মার্কিন গণমাধ্যমে ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারিমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট। গতকালই রোসনেফ্ট এবং লুকোইলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
ঘটনাচক্রে, একই দিন পুতিনের সঙ্গে সম্ভাব্য বৈঠক বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প। হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টে হওয়ার কথা ছিল সেই বৈঠক। গতকাল ওয়াশিংটনে এ সম্পর্কে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেছেন, “আমার কাছে বৈঠকটি ঠিক বলে মনে হচ্ছে না।”
ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ সম্পর্কে স্কট বেসেন্ট বলেন, “প্রেসিডেন্ট পুতিন একটি অর্থহীন যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন এবং বার বার আহ্বান জানানোর পরও তিনি থামছেন না। তাই ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট রাশিয়ার দুই বৃহত্তম তেল কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ক্রেমলিনের যুদ্ধ মেশিনকে সচল রাখতে এই দুই কোম্পানির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।”
সাক্ষাৎকারে বেসেন্ট জানান, রাশিয়ার ওপর এ পর্যন্ত যতগুলো বড় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র, সেসবের মধ্যে এই নিষেধাজ্ঞাটি গুরুত্বপূর্ণ।
২০২৪ সালের নভেম্বরের নির্বাচনে জিতে ২০২৫ সালের ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের শপথ গ্রহণ করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ওই অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, ক্ষমতা গ্রহণের পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানকে অগ্রাধিকার দেবেন তিনি।
তারপর গত দশ মাসে কয়েক বার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন-এর সঙ্গে কথা বলেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। গত ১৫ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা অঙ্গরাজ্যে বৈঠকও হয়েছে দুই দেশের প্রেসিডেন্টের মধ্যে। তবে কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয় সেই বৈঠক।
গত সপ্তাহে ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন, ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি ইস্যুতে পুতিনের সঙ্গে ফের বৈঠকে বসছেন তিনি এবং সেই বৈঠকটি হবে হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টে। বৈঠকের দিনক্ষণ না জানালেও ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, চলতি অক্টোবরের শেষ দিকে বৈঠকটি হতে পারে। ছয় দিন আগে এই নিয়ে ট্রাম্প এবং পুতিনের মধ্যে টেলিফোনে কথাও হয়েছে।
ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বেসেন্ট বলেন, “আলাস্কার সেই বৈঠকের আগে আমরা আশা করেছিলাম, প্রেসিডেন্ট পুতিন সৎ ও স্পষ্টবাদী মনোভাব নিয়ে আলোচনার টেবিলে আসবেন। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যখন উপলব্ধি করলেন যে আলোচনায় বিষয়টি (যুদ্ধবিরতি) এগোবে না, তখন তিনি বৈঠকের সমাপ্তি টানেন। প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে কী কথা হয়েছে, তা আমরা জানি না; তবে তিনি যখন আমাদের কাছে সেই বৈঠকের ব্যাপারে আলাপ-আলোচনা করেছেন, তখন তাকে হতাশ মনে হয়েছে।”
অর্থসূচক/



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.