জুম মিটিংয়ে অংশ নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উৎখাত ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে অংশ নেওয়ার অভিযোগে করা রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৫৬ জনকে আদালতে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল রানার আদালত এ আদেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের পেসকার সালাহ উদ্দিন জানান, পলাতক আসামিদের গ্রেফতার করা গেলো কিনা, এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল মঙ্গলবার। তবে আসামিদের গ্রেফতার করা যায়নি বলে পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল করে। এরপর আদালত পলাতক আসামিদের আদালতে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন। আগামী ১১ নভেম্বর মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিন সাবেক সংসদ সদস্য সাবিনা আক্তার তুহিনসহ ২৪ জনকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। গ্রেফতার দেখানো অপর আসামিরা হলেন- মো. ইব্রাহীম খলিল বিপুল, মো. আব্দুস সবুর, মোছা.ছানোয়ারা খাতুন, মেহেদী হাসান আকাশ, এ কে এম আকতারুজ্জামান, কে এম রাশেদ, মোছা. মেরিনা খাতুন মেরি, সুশান্ত ভৌমিক, নিজাম বারী, জাহাঙ্গীর আলম, শেখ আনিচুজ্জামান আনিচ, মো. আকরামুল আলম, মো. নুর উন নবী মন্ডল দুলাল মাস্টার্স, মো. সাইফুল ইসলাম সর্দার, কাজী আবুল কালাম, মোছা.ফেন্সী, কে এম শাহ নেওয়াজ ওরফে শিবলু, রফিকুল ইসলাম, জিন্নাত সুলতানা ঝুমা, মেহেদী হাসান ঈশান ওজনি চন্দ্র সূত্রধর।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী জানান, আসামিরা মামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকায় সিআইডির পক্ষ থেকে ২৪ জনকে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করা হয়। আজ তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তাদের জামিন আবেদন করে শুনানি করেন আইনজীবীরা। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে জামিনের বিরোধিতা করি। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।
এর আগে এ মামলায় ৬ আসামিকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের এই প্রধান আইনজীবী।
গত ২৭ মার্চ শেখ হাসিনাসহ ৭৩ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে আদালতে মামলাটি করেন সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার মো. এনামুল হক। তদন্ত শেষে গত ৩০ জুলাই শেখ হাসিনাসহ ২৮৬ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তিনি। ১৪ অগাস্ট অভিযোগপত্র গ্রহণ করে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়। গত ১১ সেপ্টেম্বর আসামিদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ড. রাব্বী আলমের নেতৃত্বে ‘জয় বাংলা ব্রিগেড’-এর জুম মিটিংয়ে শেখ হাসিনাসহ কয়েকশ’নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন। এ সময় শেখ হাসিনা তার নেতাকর্মীদের কাছে দেশবিরোধী বক্তব্য দেন। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে উৎখাতের নির্দেশ দেন। এ বক্তব্য সারা দেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। মামলার অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন— খুলনার যুবলীগ নেতা পারভেজ খান ইমন, চট্টগ্রাম ‘জয় বাংলা ব্রিগেড’ প্রধান কবিরুল ইসলাম আকাশ, জয় বাংলা ব্রিগেড বরিশাল বিভাগের অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, সোহানা পারভীন রুনা, হাফিজুর রহমান ইকবাল, অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান মধু, এলাহী নেওয়াজ মাছুম ও সাজ্জাদুল আনাম।



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.