চট্টগ্রামে বিমান ও সমুদ্রবন্দর এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার

যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে বিমানবন্দর ঘিরে গড়ে তোলা হয়েছে চার স্তরের নিরাপত্তা বলয়। একই সঙ্গে সমুদ্রবন্দরের আশপাশের এলাকায় সব ধরনের মিছিল, সমাবেশ ও অতিরিক্ত জনসমাগম নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সমুদ্রবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য স্বাভাবিক রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে পুলিশ।

সম্ভাব্য সাইবার হামলা ঠেকাতে দেশের সব বিমানবন্দরে সতর্কতা জারি করেছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। তবে এর আগেই শাহ আমানত বিমানবন্দরে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বাড়ানো হয়েছিল নিরাপত্তা নজরদারি। সন্দেহজনক যাত্রীদের পর্যবেক্ষণ জোরদার করা হয়েছে এবং বিমানবন্দর এলাকায় টহল বাড়ানো হয়েছে।

বিমানবন্দরের সার্বিক নিরাপত্তা তদারক করছে বিমানবাহিনীর নেতৃত্বাধীন একটি টাস্কফোর্স। বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন শেখ আবদুল্লাহ আলমগীর বলেন, বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে একটি টাস্কফোর্স কাজ করছে। আমাদের ফ্লাইট সেফটি ইমপ্লিমেন্টেশন সেন্টারও রয়েছে। প্রতিটি নিরাপত্তা সংস্থার সঙ্গে ধারাবাহিক সমন্বয়ের মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে।

পতেঙ্গা এলাকায় বিমানবন্দরের অবস্থান হওয়ায় আশপাশে বসতি এলাকা রয়েছে। তাই সীমানা প্রাচীরের নিরাপত্তা জোরদারে মোতায়েন করা হয়েছে আমর্ড ব্যাটালিয়ন পুলিশ ও আনসার সদস্যদের। বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা ইব্রাহীম খলিল বলেন, নিরাপত্তা পেট্রোলিং ও টহলের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। সব নিরাপত্তা সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে একটি সমন্বয় কমিটির মাধ্যমে নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হচ্ছে।

অন্যদিকে, আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য স্বাভাবিক রাখতে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) বন্দর এলাকায় ৩০ দিনের জন্য সব ধরনের মিছিল-সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। বারিক বিল্ডিং, নিমতলা বিশ্বরোড, কাস্টমস মোড় ও সল্টগোলা ক্রসিং এলাকায় এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে।

সিএমপির উপকমিশনার কবীর আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, বন্দরকেন্দ্রিক কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থান আছে—যেমন বারিক বিল্ডিং ও তিন নম্বর জেটি গেট। এসব স্থানে যদি কোনো মিছিল বা সমাবেশ হয়, তাহলে বন্দরে যানবাহন প্রবেশ ও বের হওয়া ব্যাহত হয়।

নগরীর আগ্রাবাদ থেকে পতেঙ্গা উপকূল পর্যন্ত প্রায় ১০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় রয়েছে বন্দর ও বিমানবন্দর ছাড়াও দুটি সরকারি ইপিজেড, পদ্মা-মেঘনা-যমুনার তেল স্থাপনা এবং সরকারি-বেসরকারি তেল শোধনাগার। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এই অঞ্চলটিকে দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

এদিকে দেশের বিমানবন্দরে সম্ভাব্য সাইবার হামলা প্রতিরোধ এবং বাংলাদেশে নিরবচ্ছিন্ন বিমান চলাচল নিশ্চিতে ১০ দফা নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।

 

গত সপ্তাহে জারি করা এই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সম্প্রতি বিশ্বের বিভিন্ন বিমানবন্দর সাইবার হামলার শিকার হয়েছে। বাংলাদেশে নিরবচ্ছিন্ন বিমান চলাচল নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ করা হলো।

সম্প্রতি চেক-ইন ও বোর্ডিং সিস্টেম সাপোর্ট দেওয়া একটি প্রতিষ্ঠানে সাইবার হামলার কারণে ইউরোপের ব্যস্ততম বিমানবন্দর লন্ডনের হিথরোসহ বেশ কয়েকটি বড় বিমানবন্দরের কার্যক্রম ব্যাহত হয়। এতে অনেক ফ্লাইট বিলম্বিত ও বাতিল হয়েছে।

ব্রাসেলস বিমানবন্দর এবং বার্লিন বিমানবন্দরও এই সাইবার হামলায় ক্ষতির শিকার হয়েছে। পাশাপাশি ডাবলিন বিমানবন্দরে এই সমস্যার কিছুটা প্রভাব পড়ে। এ ছাড়া আয়ারল্যান্ডের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিমানবন্দর কর্কও প্রভাবিত হয়েছে।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.