৯ আর্থিক প্রতিষ্ঠান অবসায়ন করা হবে: প্রেস সচিব

পাঁচটি ইসলামি ব্যাংক একিভুত হচ্ছে আর ৯টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান অবসায়ন করা হবে। বুধবার (৮ অক্টোবর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে স্বল্পোন্নত দেশ হতে বাংলাদেশের উত্তরণকে মসৃণ ও টেকসই করার লক্ষে প্রণীত মসৃণ উত্তরণ কৌশল বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণের জন্য গঠিত জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটির সভায় এই বিষয়ে আলোচনা হয়। সভায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সভাপতিত্ব করেন। পরে বেইলি রোডের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

প্রেস সচিব বলেন, সভায় বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর বলেছেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমরা আশাতীত সাফল্য পেয়েছি। আমাদের পাঁচ মাসের আমদানির সমান রিজার্ভ আছে বর্তমানে। মূল্যস্ফীতি ১২ দশমিক ৫ থেকে ৮ দশমিক ৩ এ নেমে এসেছে। গত এক-দুই মাসে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নেমে আসতো, কিন্তু নামেনি কারণ চালের দাম হঠাৎ করে বেড়ে গিয়েছিল। এখন চালের দাম কমা শুরু করেছে। আমরা আশা করছি, মূল্যস্ফীতি সামনের দিনগুলোতে আরেকটু কমবে। বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর বলেছেন, খেলাপি ঋণ কমিয়ে চার-পাঁচ শতাংশে নিয়ে আসার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। পাঁচটি ইসলামি ব্যাংক একিভুত হচ্ছে আর ৯টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান অবসায়ন করা হবে।

তিনি বলেন, পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোতে আমাদের নতুন নতুন শ্রমবাজার তৈরি হচ্ছে। জাতিসংঘের সফরের সময় প্রধান উপদেষ্টা আলবেনিয়ার প্রেসিডেন্ট এবং কসোভোর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। এই দুটি দেশ বাংলাদেশ থেকে শ্রম শক্তি নিতে চাচ্ছেন। তাদের দেশের ক্ষেত্রে ভিসার যে জটিলতা সেটা যেন না থাকে। পূর্ব ইউরোপে যেসব দেশ আছে তাদের কারোই বাংলাদেশে কোনও দূতাবাস নেই। এ জন্য অনেককেই দিল্লি গিয়ে ভিসার জন্য আবেদন করতে হয়। সেই বিষয়টি সভায় এসেছে যে ভিসা জটিলতা থেকে কীভাবে উত্তরণ করা যায়। এটা নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করছে, সামনে আরও সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া হবে।

শফিকুল আলম বলেন, অনেকগুলো দেশের সঙ্গে আমরা মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলাপ করছি। জাপান, সিঙ্গাপুর, ইউএই, কোরিয়া, মালয়েশিয়াসহ অনেকগুলো দেশের সঙ্গে আমাদের আলাপ চলছে। সেই আলোকে ট্রেড নেগসিয়েশনের জন্য আমাদের একটা টিম করা হয়েছে। কিন্তু এ জন্য আমাদের আরও সক্ষমতার প্রয়োজন আছে। সে জন্য আমরা বিশ্বব্যাংক এবং এডিবির সঙ্গে কথা বলছি। আমরা আশা করছি, এই বিষয়ে তারা আমাদের সাহায্য করবে।

তিনি বলেন, আইসিটিতে প্রচুর জব কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে কিন্তু সেটা দৃশ্যমান ছিল না। আগে এই খাতে ছয় শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া হতো। আজকের সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, পুরনো লেগেসি সেক্টরগুলো থেকে প্রণোদনা কমিয়ে এখন যেহেতু এআই নিয়ে কাজ বেশি হচ্ছে, যারা এটি নিয়ে কাজ করছেন তাদের প্রণোদনা কিছুটা বাড়িয়ে দেওয়া হবে। প্রধান উপদেষ্টা খুব দ্রুত এই সেক্টর নিয়ে একটা রোডম্যাপ দিতে বলেছেন, যাতে এই সেক্টরে অনেক কর্মসংস্থান তৈরি হয়।

তিনি আরও বলেন, খেলাপি ঋণ নিয়ে অনেক আলোচনা হচ্ছে। খেলাপি ঋণের পরিমাণ এখন ২৪ শতাংশের মতো। এর পুরো কারণ, শেখ হাসিনার আমলে যে বড় আকারে চুরি হয়েছে, ব্যাংকগুলো যেভাবে খালি করে দেওয়া হয়েছে, সেই কারণে খেলাপি ঋণ বেড়েছে। এ কারণে বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেক্টরের হেলথ আমরা এখনও ঠিকমতো পুনস্থাপন করতে পারিনি, এটা নিয়ে কাজ হচ্ছে।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.