যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার জানিয়েছেন, ভারতের জন্য যুক্তরাজ্য ভিসা নীতিতে কোনও শিথিলতা আনবে না। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার করতে ইতিমধ্যে নয়াদিল্লি সফরে রয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার।
মঙ্গলবার (০৮ অক্টোবর) সফরের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্টারমার বলেন, এটা ভিসার বিষয় নয়। বিষয়টা হলো বাণিজ্য থেকে বাণিজ্যিক সম্পর্ক, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান এবং যুক্তরাজ্যের সমৃদ্ধি।
প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথম ভারত সফরে স্টারমারের সঙ্গে রয়েছেন একশরও বেশি উদ্যোক্তা, সংস্কৃতিকর্মী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের একটি প্রতিনিধিদল। তার লক্ষ্য যুক্তরাজ্যের বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও স্থবির অর্থনীতিকে গতিশীল করা।
গত জুলাই মাসে দীর্ঘ আলোচনার পর ভারত–ব্রিটেন বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তির ফলে ব্রিটিশ গাড়ি ও হুইস্কি ভারতের বাজারে আরও সস্তায় রফতানি করা যাবে। আবার ভারতীয় টেক্সটাইল ও গহনাও যুক্তরাজ্যে কম খরচে পৌঁছাবে। তবে যুক্তরাজ্যের সরকার বলেছে, এই চুক্তির ফলে অভিবাসননীতিতে কোনও পরিবর্তন আসছে না।
চুক্তির আওতায় যুক্তরাজ্যে স্বল্পমেয়াদি ভিসায় কর্মরত ভারতীয় কর্মীদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা করের তিন বছরের ছাড় রাখা হয়েছে। কিন্তু সরকার স্পষ্ট জানিয়েছে, এর বাইরে আর কোনও ভিসা সুবিধা দেওয়া হবে না।
গত সপ্তাহে লেবার পার্টির সম্মেলনে অভিবাসন হ্রাসের কঠোর নীতি ঘোষণা করেন স্টারমার। তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি বৃদ্ধির জন্য বিশ্বের সেরা প্রতিভাধরদের আকর্ষণ করতে চান তারা, তবে ভারতের জন্য নতুন কোনও ভিসা রুট খোলার পরিকল্পনা নেই।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এইচ-১বি ভিসা পরিবর্তনের পর যুক্তরাজ্য কি প্রযুক্তিখাতে উদ্যোক্তা আকর্ষণ করবে কিনা, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে স্টারমার বলেন, আমরা বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা মেধাবীদের যুক্তরাজ্যে আনতে চাই। কিন্তু ভারতের ক্ষেত্রে নতুন ভিসা নীতির কোনও পরিকল্পনা নেই।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ। এই কোম্পানি আগামী বছর দিল্লি ও হিথ্রো রুটে তৃতীয় দৈনিক ফ্লাইট চালুর ঘোষণা দিয়েছে। ম্যানচেস্টার বিমানবন্দরও নতুন করে দিল্লির সঙ্গে সরাসরি ফ্লাইট চালুর ঘোষণা দিয়েছে।
দুই দিনের এই সফরে স্টারমার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করবেন। সফরের আগে মোদি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে স্টারমার রসিকতার ঢঙে বলেন, আমি পুতিনকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা পাঠাইনি, ভবিষ্যতেও পাঠাবো না। এতে নিশ্চয়ই অবাক হওয়ার কিছু নেই।
রাশিয়া থেকে ভারতের তেল আমদানি নিয়ে মোদির সমালোচনা করবেন কি না—এমন প্রশ্নে স্টারমার বলেন, যুক্তরাজ্যের নজর এখন রাশিয়ার তথাকথিত শ্যাডো ফ্লিট-এর দিকে। এই বহরে রয়েছে অনিয়ন্ত্রিত ট্যাংকার, যা রাশিয়া থেকে তেল পরিবহন করে আন্তর্জাতিক বাজারে।
স্টারমার বলেন, রাশিয়ার এই শ্যাডো ফ্লিট মোকাবিলায় যুক্তরাজ্য নেতৃস্থানীয় একটি দেশ হিসেবে কাজ করছে।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.