জাতিসংঘের নিয়ন্ত্রিত আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থাকে (আইএইএ) আর সহযোগিতা না করার ঘোষণা দিয়েছে ইরান। গতকাল রোববার এ প্রসঙ্গে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি জানিয়েছেন, ‘কায়রোতে আইএইএর সঙ্গে আমাদের যে সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছিল, তা আর প্রাসঙ্গিক নয়।’
গত সেপ্টেম্বরে মিশরের রাজধানী কায়রোতে আইএইএর সঙ্গে চুক্তি সই করেছিল ইরান। ওই চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ইরান তাদের পরমাণু কেন্দ্রগুলিতে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক দলকে যেতে দেবে বলে ‘জাতিসংঘের সংস্থাটির তরফে জানানো হয়েছিল।
তবে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেকশিয়ানের সরকার সোমবার কার্যত সেই সম্ভাবনায় পানি ঢেলে দিল। পারমাণু কর্মসূচির কারণে ইরানের ওপর অস্ত্র ও অন্যান্য যে সব নিষেধাজ্ঞা বলবৎ করা হয়েছে, গত সপ্তাহে সেগুলি পুনর্বহালের ঘোষণা করেছিল ‘জাতিসংঘ। তার পরেই এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করল ইরান।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ১৩ জুন রাতে ইরানের রাজধানী তেহরান এবং একাধিক পরমাণুকেন্দ্রে হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান। ওই অভিযানের পোশাকি নাম ছিল, ‘অপারেশন রাইজি লায়ন’!
ঘটনাচক্রে, ইসরায়েলি হামলার দিনকয়েক আগে আইএইএর মহাসচিব জেনারেল রাফায়েল মারিয়ানো গ্রোসি জানিয়েছিলেন, পরমাণু বোমা নির্মাণের উদ্দেশ্যে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি চালাচ্ছে ইরান।
যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছিল পেজেকশিয়ান সরকার। ইসরায়েলি হামলার ৯ দিন পরে ২২ জুন ইরানের তিনটি পরমাণুকেন্দ্র, ফোরদো, নাতান্জ এবং ইসফাহানে হামলা চালিয়েছিল আমেরিকার বি-২ বোমারু বিমান। ফেলা হয় বাঙ্কার ব্লাস্টার সিরিজের সবচেয়ে শক্তিশালী বোমা জিবিইউ-৫৭।
সেই অভিযানের পোশাকি নাম ছিল ‘অপারেশন মিডনাইট হ্যামার’। ২৪ জুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদ্যোগে যুদ্ধবিরতি হলেও ওয়াশিংটনের দাবি মেনে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বন্ধ করতে রাজি হয়নি তেহরান।
যা নিয়ে নতুন করে অশান্তির আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল পশ্চিম এশিয়ায়। এবার কার্যত সেই আশঙ্কা আরও জোরদার হল।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.