গাজায় সংঘাত বন্ধে ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষিত ‘শান্তি পরিকল্পনায়’ আংশিক সম্মতি দিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতকামী গোষ্ঠি হামাস। বাকী কিছু চূড়ান্ত করার জন্য আলোচনা প্রয়োজন বলে জানিয়েছে তারা। এর প্রেক্ষিতে ইসরায়েলকে গাজায় হামলা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাম্প।
হামাসের সম্মতির বিষয়ে ট্রাম্প তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে লিখেছেন, ‘হামাসের সদ্য প্রকাশিত বিবৃতির ভিত্তিতে আমি বিশ্বাস করি, তারা স্থায়ী শান্তির জন্য প্রস্তুত। ইসরায়েলকে অবিলম্বে গাজায় বোমাবর্ষণ বন্ধ করতে হবে, যাতে আমরা জিম্মিদের নিরাপদে এবং দ্রুত মুক্ত করতে পারি।’
খবর এপি ও সিএনবিসির।
গতকাল শুক্রবার ট্রাম্প ট্রুথ সোস্যালে দেওয়া এক পোস্টে হামাসকে কথিত শান্তি পরিকল্পনা মেনে নিতে আগামী রোববার পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন । এর মধ্যে এটি মেনে না নিলে হামাসকে কঠোর পরিণতি ভোগ করতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজা যুদ্ধ বন্ধে তাঁর প্রশাসনের ২০ দফা পরিকল্পনা ঘোষণা করেন। আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই পরিকল্পনার প্রতিটি দফা হামাসের বিপক্ষে এবং ইসরায়েলের অনুকূলে যায়। এর প্রধান দিক হচ্ছে- হামাসের নিরস্ত্রীকরণ এবং গাজার ভবিষ্যত পরিকল্পনায় তাদের কোনোরকম সম্পৃক্ততা না রাখা। নেতানিয়াহু তথা ইসরায়েলের নানা দাবির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এই পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের ওই পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, ইসরায়েল ২৫০ যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেবে, সেই সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে আটক ১ হাজার ৭০০ ফিলিস্তিনি বন্দীকে ছেড়ে দেবে। বিনিময়ে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ৪৮ ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্ত করবে। তাঁদের মধ্যে ২০ জন জীবিত আছেন বলে মনে করা হচ্ছে। এরপর হামাসের সদস্যরা যদি ‘শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান করার ও তাঁদের অস্ত্র ত্যাগের’ প্রতিশ্রুতি দেন, তবে তাঁদের ক্ষমা করা যেতে পারে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, ইসরায়েল ধীরে ধীরে গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার করবে এবং আরব দেশগুলোর নেতৃত্বে একটি অস্থায়ী আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী (আইএসএফ) উপত্যকাটির নিরাপত্তার দায়িত্ব গ্রহণ করবে। ইতিমধ্যে, ‘পিস বোর্ড’ নামে একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার তত্ত্বাবধানে এক ফিলিস্তিনি কমিটি গাজার প্রশাসন পরিচালনা করবে; যতক্ষণ না পুনর্গঠিত ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ক্ষমতা গ্রহণে প্রস্তুত হয়। প্রস্তাবে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের আকাঙ্ক্ষা স্বীকৃত হয়েছে এবং ফিলিস্তিনিদের ‘স্ব-নিয়ন্ত্রণ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার গ্রহণযোগ্য পথ’ দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে।
শুক্রবার হামাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা পরিকল্পনাটি পর্যালোচনা করে দেখছে। এরপর তাদের মতামত বা প্রতিক্রয়া জানানো হবে।



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.