চিপ উৎপাদন যুক্তরাষ্ট্রে সরানোর প্রতিশ্রুতি মানছে না তাইওয়ান

তাইওয়ান তাদের চিপ উৎপাদনের অর্ধেক যুক্তরাষ্ট্রে সরানোর প্রতিশ্রুতি মানছে না বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার। তাইওয়ানের শীর্ষ চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টিএসএমসি বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত চিপ তৈরি করে, যার অন্যতম গ্রাহক এনভিডিয়া ও অ্যাপল। যুক্তরাষ্ট্রের চিপ উৎপাদনে তাইওয়ানের ওপর নির্ভরতা রয়েছে।

বুধবার (১ অক্টোবর) সিএনএনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

সিএনএন জানায়, তাইওয়ান মনে করে, চিপ তৈরির সক্ষমতা শুধু অর্থনৈতিক নয়, বরং এটি চীনের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তাদের সুরক্ষার একটি সিলিকন ঢাল হিসেবেও কাজ করে। এটি আন্তর্জাতিক সমর্থন পাওয়ার ক্ষেত্রেও সহায়ক ভূমিকা রাখে।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে দেশে ফিরে তাইওয়ানের উপপ্রধানমন্ত্রী চেং লি চিউন গণমাধ্যমকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে সেমিকন্ডাক্টরের ৫০ শতাংশ উৎপাদন সরানোতে তাইওয়ান কখনো সম্মতি দেয়নি। এসব চিপ শুধু ইলেকট্রনিকস নয়, আইফোন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং সামরিক ব্যবস্থার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলেন, ‘আমাদের আলোচক দল কখনোই অর্ধেক উৎপাদন ভাগ করার প্রতিশ্রুতি দেয়নি। তাই তাইওয়ানের জনগণ নিশ্চিন্ত থাকতে পারে।’

এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অব কমার্স হাওয়ার্ড লুটনিক এক সাক্ষাৎকারে বলেন, তাইওয়ানকে তাদের উৎপাদনের অর্ধেক যুক্তরাষ্ট্রে আনতে হবে। তিনি বলেন, ‘তাইওয়ান যদি ৯৫ শতাংশ চিপ উৎপাদন করে, তবে প্রয়োজনে আমি সেগুলো কীভাবে ব্যবহার করব—বিমানে করে, নাকি জাহাজে করে?’

তবে চীন যদি তাইওয়ান আক্রমণ করে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র কী ধরনের পদক্ষেপ নেবে—এ বিষয়ে লুটনিক কিছু বলেননি। চীন বহুদিন ধরেই তাইওয়ানকে নিজেদের অংশ দাবি করে আসছে এবং বলেছে, প্রয়োজনে শক্তি প্রয়োগ করে একীভূত করা হবে।

তাইওয়ানের উপপ্রধানমন্ত্রী বলেন, সর্বশেষ আলোচনায় এ ধরনের কোনো প্রস্তাব তোলা হয়নি। যুক্তরাষ্ট্র-তাইওয়ান আলোচনায় টিএসএমসি অংশ নিয়েছে কি না, সেটিও পরিষ্কার নয়।

এদিকে তাইওয়ানের বিরোধী দল কুওমিনতাংয়ের (কেএমটি) আইনপ্রণেতা হসু ইউ-চেন যুক্তরাষ্ট্রের দাবিকে “লুটপাট” আখ্যা দিয়ে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান, দেশের স্বার্থ বিক্রি করে দেওয়া এমন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করতে।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি টিএসএমসির উন্নত উৎপাদন ক্ষমতা জোর করে ভাগ করে নেয়, তাহলে সিলিকন ঢালের কার্যকারিতা কমে যাবে এবং তাইওয়ানের কৌশলগত নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে।

তাইওয়ানের মন্ত্রিসভা এক বিবৃতিতে জানায়, শেষ হওয়া পঞ্চম দফা যুক্তরাষ্ট্র-তাইওয়ান বাণিজ্য আলোচনায় কিছু অগ্রগতি হয়েছে। তাইওয়ানের লক্ষ্য হলো যুক্তরাষ্ট্রে তাদের পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক কমানো।

অর্থসূচক/

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.