জনগণের নির্বাচন ভাবনা জানতে চালানো একটি জরিপের ফলাফল প্রকাশ করেছে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ইনোভিশন কনসাল্টিং। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন- এমন ব্যক্তিরা পরবর্তী সরকার গঠনের জন্য ৪১ দশমিক ৩ শতাংশ বিএনপিকে এবং ৩০ দশমিক ৩ শতাংশ জামায়াতে ইসলামীকে সমর্থন জানিয়েছেন।
বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় আর্কাইভস ভবনের মিলনায়তনে জরিপের ফলাফল প্রকাশ করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে জরিপের ফলাফল তুলে ধরেন ইনোভিশন কনসাল্টিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবাইয়াত সরওয়ার। পরে ফলাফলের ওপর আলোচনায় অংশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ এম শাহান, ভয়েস ফর রিফর্ম এর সহ-সমন্বয়ক ফাহিম মাশরুর প্রমুখ।
জরিপে কার্যক্রম নিষিদ্ধ দল আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়েও জানতে চাওয়া হয়েছিল। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৪৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ মনে করেন দলটিকে সুযোগ দেওয়া উচিত। তবে ৪৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ অংশগ্রহণকারী বলেছেন, নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়ার আগে বিচার হওয়া দরকার।
সংস্থাটি জানায়, ‘জনগণের নির্বাচন ভাবনা’ নিয়ে দ্বিতীয় দফার দ্বিতীয় পর্বের জরিপের ফলাফল এটি। এতে অংশ নেন ১০ হাজার ৪১৩ জন। তাদের মধ্যে ৬৯ দশমিক ৫ শতাংশ শহরের ও ৩০ দশমিক ৫ শতাংশ গ্রামের ভোটার। ৬৪ জেলায় ৫২১টি প্রাইমারি স্যাম্পলিং ইউনিটে জরিপটি চালানো হয়।
জরিপ অনুযায়ী, ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন- এমন উত্তরদাতাদের মধ্যে ৪১ দশমিক ৩ শতাংশ বিএনপিকে এবং ৩০ দশমিক ৩ শতাংশ জামায়াতে ইসলামীকে সমর্থন জানিয়েছেন। আগের জরিপের তুলনায় আওয়ামী লীগের সমর্থন ১৪ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৮ দশমিক ৮ শতাংশ হয়েছে। অন্যদিকে, এনসিপি ও ইসলামী আন্দোলনের সমর্থন কমে যথাক্রমে ৪ দশমিক ১ শতাংশ ও ৩ দশমিক ১ শতাংশ হয়েছে।
জরিপে একটি সম্ভাব্য পরিস্থিতি বিবেচনায় নেওয়া হয়, যেখানে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে বিএনপির সমর্থন বেড়ে ৪৫ দশমিক ৬ শতাংশ এবং জামায়াতের সমর্থন ৩৩ দশমিক ৫ শতাংশে দাঁড়াতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
জরিপের তথ্য বলছে, বয়স বাড়ার সঙ্গে বিএনপিতে সমর্থন বাড়ে, তবে শিক্ষাগত যোগ্যতা বাড়লে এই সমর্থন কমে আসে। অন্যদিকে, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) তরুণ ও বেশি শিক্ষিত ভোটারদের মধ্যে তুলনামূলকভাবে বেশি জনপ্রিয়।
প্রথম দফার তুলনায় ভোটারদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার হার কিছুটা কমেছে (৬২% থেকে ৫৭.৮%)। তবে, যারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাদের মধ্যে পছন্দের কথা জানানোর প্রবণতা ৬৫.৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ৮৩.২ শতাংশ হয়েছে। ভবিষ্যৎ সরকারের কাছে জনগণের প্রত্যাশার ক্ষেত্রেও পরিবর্তন এসেছে। নিত্যপণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণ (৫৪.৬%) একটি বড় উদ্বেগের বিষয় হলেও এখন জনগণের প্রধান দাবি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি (৫৭.৫%)। এ ছাড়া, ৩৬ দশমিক ৯ শতাংশ উত্তরদাতা দুর্নীতি কমানোকে এবং ২০ দশমিক ৩ শতাংশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সংস্কার করাকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন।



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.