গৃহঋণের সীমা বাড়ানোসহ ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের ৮ দফা দাবি

ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতের জন্য ঋণ শ্রেণীকরণ নীতিমালা শিথিলকরণ, কোনো ঋণ টানা এক বছর খেলাপি থাকলে তা অবলোপনের সুযোগ, ব্যাংক মাশুলের হার পুনর্নির্ধারণ এবং গৃহঋণের সীমা বাড়ানোসহ আটটি দাবি জানিয়েছে ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি)।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক সভায় এসব দাবি তুলে ধরেন এবিবির প্রতিনিধিরা। সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

জানা গেছে, গত কয়েক মাস ধরেই ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকে এসব দাবির বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দিয়ে আসছিল এবিবি। এবিবির অনুরোধে আজকের এই সভার আয়োজন করা হয়। সভায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক কিছু দাবির প্রতি একমত পোষণ করলেও, গ্রাহকের স্বার্থ বিবেচনায় অনেক দাবি এড়িয়ে যাওয়া হয়। আলোচনার পর কিছু বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হতে পারে বলে গণমাধ্যমকে জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা।

এবিবির উত্থাপিত ৮টি দাবি:

১. বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে মাঝেমধ্যে আগের নিয়মে অর্থ জমা করা হচ্ছে, এতে ২–৭ দিন সময় লাগছে। এ কারণে সব লেনদেন ডিজিটাল মাধ্যমে সম্পন্ন করার দাবি।
২. ব্যাংকগুলোর টিয়ার-২ বন্ডের মূলধন সংগ্রহ কাঠামো নমনীয় করা।
৩. ঋণ শ্রেণীকরণ ও নিরাপত্তা সঞ্চিতি নীতিমালায় অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি (সিএমএসএমই) খাতে ছাড় দেওয়া।
৪. কোনো ঋণ টানা এক বছর খেলাপি থাকলে তা অবলোপনের সুযোগ দেওয়া।
৫. চলমান ঋণ নবায়নের ক্ষেত্রে সীমার অতিরিক্ত অংশ সমন্বয়ে ৯০ দিনের অতিরিক্ত সময় এবং ডিসেম্বর পর্যন্ত নবায়নের অনুমতি।
৬. ব্যাংকিং সেবার নির্ধারিত মাশুল বাতিল করে নিজ নিজ ব্যাংককে সে দায়িত্ব দেওয়ার সুযোগ।
৭. ব্যাংক হিসাব খোলার সময় জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাইকরণে পূর্ণ স্থায়ী ঠিকানা দেখার সুযোগ দেওয়া।
৮. গৃহঋণের সর্বোচ্চ সীমা ৫ কোটি টাকায় উন্নীত করা ও ৯০ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ বিতরণের সুযোগ প্রদান। হাইব্রিড গাড়ির ঋণেও ৯০ শতাংশ ঋণ এবং ঋণসীমা অপসারণ। ব্যক্তিগত ঋণের সীমা ৪০ লাখ টাকা এবং জামানতবিহীন ক্রেডিট কার্ডের সর্বোচ্চ সীমা ৫০ লাখ টাকা নির্ধারণ।

সভায় এবিবির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন এবিবির চেয়ারম্যান ও সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন, ডাচ্–বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেম মো. শিরিন, পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী, প্রাইম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাসান ও. রশীদ, ইস্টার্ন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী রেজা ইফতেখার, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান, ব্যাংক এশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সোহেল আর কে হুসেইন এবং স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নাসের এজাজ বিজয়।

সভা শেষে এবিবির চেয়ারম্যান মাসরুর আরেফিন গণমাধ্যমকে বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। আমাদের প্রস্তাবগুলোতে গভর্নর ইতিবাচকভাবে সাড়া দিয়েছেন।”

অর্থসূচক/

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.