বর্ণাঢ্য আয়োজনে রাজধানী ঢাকায় জাতিসংঘ ঘোষিত ‘বিশ্ব শান্তি দিবস-২০২৫’ উদযাপন করেছে দেশের ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম উৎপাদন খাতের অন্যতম শীর্ষ প্রতিষ্ঠান জেএমআই গ্রুপ। রোববার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে স্থাপিত ‘শান্তি স্তম্ভ’-এর সামনে বেলুন ও শান্তির প্রতীক সাদা পায়রা উড়িয়ে শান্তি দিবসের শোভাযাত্রা উদ্বোধন করেন জেএমআই গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবদুর রাজ্জাক।
রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) প্রতিষ্ঠানটি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
শোভাযাত্রাটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলের সামনে থেকে শুরু হয়ে দোয়েল চত্বর প্রদক্ষিণ করে রাজু ভাষ্কর্যের পাদদেশে এসে শেষ হয়। পরে জেএমআই গ্রুপের প্রধান কার্যালয়ের মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়। এতে অংশ নিয়ে বক্তারা জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানবতার সুখ শান্তি অর্জনে জনমত সৃষ্টির লক্ষ্যে বিশ্ব শান্তি দিবস পালনের গুরুত্ব তুলে ধরেন। সাম্য আর সম্প্রীতির বিশ্ব গড়তে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বানও জানান তারা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেএমআই গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবদুর রাজ্জাক বলেন, “২০০৮ সাল থেকে প্রতিবছর জেএমআই গ্রুপ বাংলাদেশে বিশ্ব শান্তি দিবস পালন করে আসছে। উদার মানসিকতা নিয়ে নির্যাতিতদের পাশে দাঁড়িয়ে শান্তি এবং নিরাপত্তার মৌলিক অধিকারসমূহকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার বৈশ্বিক উদ্যোগে সামিল হতেই আমাদের এই প্রচেষ্টা।”
তিনি আরও বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, শান্তি শুধু একটি শব্দ নয়, এটি একটি জীবনদর্শন। যে স্বপ্ন একজন শান্তিকামী মানুষ দেখে, আমি সেই স্বপ্নকেই বাস্তবায়ন করতে চাই আমার কর্মের মাধ্যমে। জেএমআই পরিবারের প্রতিটি সদস্য জাতিসংঘ ঘোষিত বিশ্ব শান্তি দিবসের প্রতিপাদ্য সমুন্নত রাখতে বদ্ধপরিকর। আমরা চাই এই একটি দিনের অনুশীলনকে পর্যায়ক্রমে প্রতিটি দিন তথা ৩৬৫ দিন-এর অনুশীলনে পরিণত করে পরিপূর্ণভাবে বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠা হোক।”
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে জেএমআই গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. জাবেদ ইকবাল পাঠান বলেন, “শান্তি কোনো নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর জন্য নয়, এটি সমগ্র মানব জাতির অধিকার। শান্তি মানে শুধু যুদ্ধের অনুপস্থিতি নয়, বরং মানবিক অধিকার ও ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা। শান্তি একটি মহৎ ও অত্যন্ত প্রয়োজনীয় লক্ষ্য। তবে নানা জায়গায়, নানা প্রেক্ষাপটে আমরা শান্তি প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ হচ্ছি। আসুন, আমরা হাতে হাত মিলিয়ে, উদার মানসিকতা নিয়ে নির্যাতিতদের পাশে দাঁড়িয়ে শান্তি এবং নিরাপত্তার মৌলিক অধিকারসমূহকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ হই। বর্ণবাদমুক্ত পৃথিবী গড়তে আমাদের বিজয় অবশ্যম্ভাবী।”
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অবঃ) মোস্তাফিজুর রহমান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পিস এন্ড কনফ্লিক্ট স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. তৌহিদুল ইসলাম।
উল্লেখ্য, বিদেশিদের সাথে যৌথ বিনিয়োগে প্রতিষ্ঠিত ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম উৎপাদন ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান জেএমআই গ্রুপ। ১৯৯৯ সালে যাত্রা শুরু করা জেএমআই গ্রুপে বর্তমানে রয়েছে জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, তুরষ্ক ও থাইল্যান্ডের সাথে যৌথ বিনিয়োগ। জেএমআই গ্রুপের ৪৩টি প্রতিষ্ঠানে আট হাজারেরও বেশি কর্মী নিয়োজিত আছেন। জাপানের নিপ্রো কর্পোরেশনের সঙ্গে যৌথ বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশ-বিদেশে স্বাস্থ্য সেবা দিচ্ছে জেএমআই গ্রুপ। পাশাপাশি দেশজুড়ে পরিবেশবান্ধব জ্বালানি চাহিদা পূরণে তরল পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) আমদানি করে বাজারজাত করছে জেএমআই। সম্প্রতি হাসপাতাল ব্যবস্থাপনায় বিনিয়োগ করেছে শিল্পগ্রুপটি। জেএমআই স্পেশালাইজড হসপিটাল লিমিটেড নামে রাজধানী ঢাকার ধানমণ্ডিতে চালু করেছে একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল, যা লাইসেন্সধারী হিসেবে বাংলাদেশে বিশ্বখ্যাত অ্যাপোলো ক্লিনিকও পরিচালনা করছে।
অর্থসূচক/



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.