ছাগলকাণ্ডে আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক সদস্য মতিউর রহমান ও তার স্ত্রী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান লায়লা কানিজ লাকিকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টা ৪০ মিনিটের দিকে তাদের কারাগার থেকে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে আনা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক সাবিকুন নাহার তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।
গতকাল মামলার তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মনিরুল ইসলাম জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেন। গত ১৩ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক সাবিকুন নাহার আসামি মতিউর ও লায়লা কানিজের তিন দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।
মতিউর রহমান ও লায়লা কানিজ লাকির বিরুদ্ধে ২ কোটি ৪৫ লাখ ৩৪ হাজার ৬১১ টাকা মূল্যের সম্পত্তির তথ্য গোপন এবং জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ৫৩ কোটি ৪১ লাখ ৩৮ হাজার ৩৯৩ টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ডিসেম্বরে মামলা করে দুদক। দুইজনের বিরুদ্ধে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ প্লেসমেন্ট শেয়ার কেনাবেচার তথ্য রয়েছে। এ ছাড়া, তাদের মেয়ে ফারজানা রহমান-এর নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৫৩ কোটি ৪১ লাখ ৩৮ হাজার ৩৯৩ টাকার সম্পদ অর্জনের মামলা রয়েছে।
গত বছরের ২ জুলাই মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের সম্পদ বিবরণী চেয়ে পৃথক নোটিশ পাঠায় দুদক। এসব নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছর ২৯ আগস্ট মতিউর রহমান, তার দুই স্ত্রী এবং ছেলে-মেয়েসহ পাঁচজনের সম্পদ বিবরণী দুদকে জমা দেন। চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
কোরবানির জন্য ১৫ লাখ টাকা দিয়ে একটি ছাগল কিনতে গিয়ে আলোচনায় আসেন মুশফিকুর রহমান ইফাত নামের এক যুবক। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুমুল আলোচনা শুরু হয়। বলা হয়, তার বাবা এনবিআর সদস্য এবং কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট আপিলাত ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট মতিউর রহমান। এরপর একের পর এক বেরিয়ে আসতে থাকে মতিউর রহমান পরিবারের বিপুল বিত্তবৈভবের চাঞ্চল্যকর তথ্য।
গত বছরের ৪ জুন মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের অনুসন্ধানে নামে দুদক। অনুসন্ধানে মতিউর ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে ৬৫ বিঘা জমি, আটটি ফ্ল্যাট, দুটি রিসোর্ট ও পিকনিক স্পট এবং তিনটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের তথ্য পায় দুদক। মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা ব্যাংক হিসাব, মোবাইল ফোনে আর্থিক সেবার হিসাব ও শেয়ারবাজারের বিও হিসাব ক্রোক করা হয়। পরে ২৪ জুন মতিউর রহমান ও তার প্রথম পক্ষের স্ত্রী এবং সন্তানের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।
অর্থসূচক/



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.