গতকাল বুধবার কিছু সময়ের জন্য বিশ্বের শীর্ষ ধনীর আসনে বসেছিলেন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ওরাকলের সহপ্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা ল্যারি এলিসন। তবে দিনের শেষে আবারও শীর্ষে ফিরে যান টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক।
বিলিয়নিয়ারদের সম্পদবিষয়ক তালিকা অনুযায়ী, গতকাল সকালে এলিসনের সম্পদ বেড়ে দাঁড়ায় ৩৯৩ বিলিয়ন বা ৩৯ হাজার ৩০০ কোটি ডলার। তখন মাস্কের সম্পদমূল্য ছিল ৩৮৫ বিলিয়ন বা ৩৮ হাজার ৫০০ কোটি ডলার। ওরাকলের শেয়ারদর একলাফে ৪০ শতাংশ বেড়ে যাওয়ায় এলিসনের সম্পদও হঠাৎ বেড়ে যায়। তবে দিনের শেষে এলিসনের শেয়ারদর কিছুটা কমে গেলে মাস্ক আবার শীর্ষস্থানে চলে আসেন। খবর গণমাধ্যমের।
এক বছরের বেশি সময় ধরে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তির খেতাব ধরে রেখেছেন মাস্ক। সম্প্রতি টেসলার শেয়ারদর পড়ে যাওয়ায় তাঁর সম্পদমূল্য কমেছে। বৈদ্যুতিক গাড়ির বাজারে বিনিয়োগকারীদের অনিশ্চয়তা এবং মাস্কের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততায় ভোক্তাদের প্রতিক্রিয়া এ পতনের অন্যতম কারণ।
অন্যদিকে ডেটা সেন্টার ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক ব্যবসার উত্থানে ওরাকল নতুন গতিতে এগোচ্ছে। কোম্পানিটি জানিয়েছে, এ বছর তাদের ক্লাউড ব্যবসার আয় ৭৭ শতাংশ বেড়ে ১৮ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৮০০ কোটি ডলারে উঠবে। এআইকেন্দ্রিক কোম্পানিগুলোর চাহিদা বৃদ্ধিই এ উত্থানের মূল কারণ।
১৯৭৭ সালে ওরাকল প্রতিষ্ঠা করেন এলিসন। ২০১৪ সাল পর্যন্ত তিনি প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী ছিলেন। বর্তমানে তিনি প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ও প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা। একই সঙ্গে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত।
সম্প্রতি টিকটকের মালিকানা নিয়ে আলোচনায়ও উঠে এসেছে এলিসনের নাম। ট্রাম্প প্রকাশ্যে বলেছেন, তিনি চান এলিসনই অ্যাপটি কিনুন। পাশাপাশি এলিসনের ছেলে ডেভিডের নেতৃত্বে প্রায় ৮ বিলিয়ন বা ৮০০ কোটি ডলারের বিনিময়ে প্যারামাউন্ট অধিগ্রহণের চুক্তিও সম্প্রতি চূড়ান্ত হয়েছে।
বিশ্ববিখ্যাত গবেষণা সংস্থা ইনফরমা কানেক্ট একাডেমি বলছে, ২০২৭ সালের মধ্যে ইলন মাস্ক ট্রিলিয়নিয়ার অর্থাৎ এক লাখ কোটি ডলারের মালিক হতে পারেন; সেই পথেই এগোচ্ছেন তিনি।
ইনফর্মা আরও বলেছে, মাস্কের সম্পদমূল্য প্রতিবছর গড়ে ১১০ শতাংশ হারে বাড়ছে। এই হারে বা তার কাছাকাছি হারেও মাস্কের সম্পদমূল্য বৃদ্ধি পেলে তিনিই যে বিশ্বের প্রথম লাখকোটিপতি হবেন, তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই। খবর গণমাধ্যমের।
যদিও এ ক্ষেত্রে মাস্কের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই, তা নয়। ইনফর্মার তথ্যানুসারে, বিশ্বের অন্যতম দামি কোম্পানি এনভিডিয়ার প্রধান নির্বাহী ও সহপ্রতিষ্ঠাতা জেনসেন হুয়াং ২০২৮ সালের মধ্যে ট্রিলিয়নিয়ার হতে পারেন। বর্তমান হিসাব অনুযায়ী, হুয়াংয়ের সম্পদমূল্য ১৫৪ বিলিয়ন বা ১০ হাজার ৫৪০ কোটি ডলার।
২০২৪ সালের শেষ দিকে মাস্কের সম্পদমূল্য দ্রুত হারে বেড়েছে। তখন তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিয়েছেন। এমনকি তিনি হয়ে উঠেছিলেন ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। কিন্তু নির্বাচনের পর তাঁদের মধুচন্দ্রিমার অবসান হলে মাস্কের সম্পদমূল্য কমতে থাকে। তা সত্ত্বেও তিনি বিশ্বের শীর্ষ ধনীর আসনে একরকম পাকাপাকিভাবে বসে আছেন, ক্ষণিকের ব্যত্যয় ছাড়া।
অর্থসূচক/



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.