বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করেছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। তার পদত্যাগের পর দেশজুড়ে নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাজধানী কাঠমান্ডুর মেয়র বালেন্দ্র শাহকে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চায় বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণ প্রজন্ম জেন-জি।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) ওলি দায়িত্ব ছাড়ার পরপরই সামাজিকমাধ্যমে বালেন্দ্রকে দায়িত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে একের পর এক পোস্ট করছে জেন-জি বিক্ষোভকারীরা।
এই আন্দোলনের সূচনা হয় যখন নেপাল সরকার ফেসবুক, ইউটিউবসহ ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের ঘোষণা দেয়। এরপর রাজপথে নামে হাজারো তরুণ-তরুণী। তবে সোমবার বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালায় আইনশৃঙ্খলাবাহিনী, যাতে শুধুমাত্র কাঠমান্ডুতেই ১৮ জনসহ মোট ১৯ জন নিহত হন। নিহতদের বেশিরভাগই স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থী।
বালেন্দ্র শাহ, যিনি “বালেন” নামেই অধিক পরিচিত, কাঠমান্ডুর বর্তমান মেয়র। ১৯৯০ সালে কাঠমান্ডুতে জন্মগ্রহণ করা বালেন একজন প্রকৌশলী এবং সাবেক র্যাপার। তিনি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়াশোনা করেন এবং ভারতের বিশ্বেশ্বরায়া টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটি থেকে স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
রাজনীতিতে প্রবেশের আগে বালেন ছিলেন নেপালের আন্ডারগ্রাউন্ড হিপ-হপ জগতের পরিচিত মুখ। তিনি তার গানের মাধ্যমে দুর্নীতি, বৈষম্যসহ বিভিন্ন সামাজিক ইস্যু তুলে ধরতেন।
২০২২ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে কাঠমান্ডুর মেয়র পদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ৬১ হাজারেরও বেশি ভোট পেয়ে জয়ী হন এবং বড় দলগুলোর প্রার্থীদের হারিয়ে আলোচনায় আসেন।
আন্দোলনে অংশ না নিয়েও সমর্থন
বালেন বিক্ষোভকারীদের সরাসরি আন্দোলনে অংশ নিতে না পারলেও, শুরু থেকেই তাদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে এসেছেন। যেহেতু জেন-জি আন্দোলনে অংশগ্রহণের বয়সসীমা ২৮ বছর নির্ধারণ করা হয়েছিল, তাই ৩০ পেরুনো বালেন সরাসরি অংশ নিতে পারেননি।
একটি পোস্টে তিনি লিখেন, “এটি তরুণ প্রজন্মের এক স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন, যাদের কাছে হয়তো আমাকেও বয়স্ক মনে হবে। আমি তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা, লক্ষ্য এবং চিন্তাভাবনা বুঝতে চাই। রাজনৈতিক দল, নেতা, কর্মী, সাংসদ ও প্রচারকদের এই সমাবেশকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করার জন্য বেশি চালাকি করা উচিত নয়।”
তিনি আরও জানান, তিনি শারীরিকভাবে উপস্থিত না থাকলেও আন্দোলনের প্রতি তার পূর্ণ সমর্থন থাকবে।
বর্তমানে জেন-জি আন্দোলনের ছায়ায় বালেন শাহের জনপ্রিয়তা দ্রুত বাড়ছে, এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, তার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার বাস্তব সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
অর্থসূচক/



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.