নেপালে সংসদ ভবনে বিক্ষোভকারীরা, গুলিতে নিহত বেড়ে ৯

নেপালে সম্প্রতি তীব্র আকার ধারণ করা ‘জেন-জি’ প্রজন্মের আন্দোলন সহিংসতায় রূপ নিয়েছে। রাজধানী কাঠমান্ডুর নিউ বানেশ্বরে অবস্থিত পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকে তাণ্ডব চালিয়েছে বিক্ষোভকারীরা।

সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত অন্তত ৯ জনের প্রাণহানি ঘটেছে বলে ভারতী পত্রিকা ইকোনমিকস টাইমস এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

বিক্ষোভকারীরা সকাল ৯টার দিকে রাজধানীর মৈতিঘর এলাকায় জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। পরে তারা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে পার্লামেন্ট ভবনের মূল গেট টপকে ভেতরে প্রবেশ করে। এই সময় পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে নিরাপত্তা বাহিনী টিয়ার গ্যাস, জলকামান এবং সরাসরি গুলি ছুঁড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা চালায়।

বিক্ষোভের পেছনে রয়েছে নেপালের তরুণ সমাজের ক্ষোভ ও হতাশা। ‘নেপো কিডস’ এবং ‘নেপো বেবিস’ নামের হ্যাশট্যাগে তারা সরকারের দুর্নীতি, ক্ষমতাবান পরিবারের সন্তানদের আধিপত্য এবং অযোগ্যতার বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে আসছিল অনলাইনে। তবে সরকার ২৬টি অনিবন্ধিত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর এই ক্ষোভ রাস্তায় নেমে আসে।

‘হামি নেপাল’ নামের একটি সংগঠন প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে এই আন্দোলনের ডাক দেয়। সংগঠনের চেয়ারম্যান সুধান গুরুং জানান, সরকারের অনিয়ম, দমননীতি এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে সারা দেশে একযোগে কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।

বিক্ষোভে অংশগ্রহণের জন্য শিক্ষার্থীদের ইউনিফর্ম পরে বই হাতে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিল, যাতে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির বার্তা দেওয়া যায়। কিন্তু পরিস্থিতি দ্রুত সহিংসতায় রূপ নেয়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ায় কাঠমান্ডু জেলা প্রশাসন কার্যালয় শহরের বিভিন্ন এলাকায় কারফিউ জারি করেছে।

বিশেষ করে বানেশ্বর, শীতলনিবাস (রাষ্ট্রপতির বাসভবন), লেইনচৌর (উপ-রাষ্ট্রপতির বাসভবন), এবং বালুয়াটার (প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন) এলাকাগুলোতে কারফিউ কার্যকর করা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বিক্ষোভ কেবল একটি প্রজন্মের ক্ষোভই নয়, বরং নেপালের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক দুর্বলতার বহিঃপ্রকাশ। সরকারের দমনমূলক আচরণ আন্দোলনকে আরও দীর্ঘস্থায়ী ও বিস্তৃত করে তুলতে পারে বলেও শঙ্কা রয়েছে।

অর্থসূচক/

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.