শতভাগ জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন নিশ্চিতে আইন শক্তিশালীকরণ জরুরি: সাংবাদিক কর্মশালায় বিশেষজ্ঞরা

জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনে বাংলাদেশ সাম্প্রতিক সময়ে কিছু অগ্রগতি অর্জন করলেও বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক অগ্রগতির তুলনায় এখনও অনেকটাই পিছিয়ে। বর্তমানে দেশে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের হার যথাক্রমে ৫০ শতাংশ ও ৪৭ শতাংশ, যেখানে বৈশ্বিক গড় ৭৭ শতাংশ ও ৭৪ শতাংশ। সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে শতভাগ জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন নিশ্চিত করতে অঙ্গীকারবদ্ধ।

সাংবাদিকদের কর্মশালায় বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন, ২০০৪ সংশোধন করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নিবন্ধনের দায়িত্ব দিলে এই লক্ষ্যে পৌঁছানো সহজ হবে। একইসঙ্গে, এটি এসডিজি ১৬ দশমিক ৯ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনেও সহায়ক হবে, যা সবার জন্য বৈধ পরিচয়পত্র নিশ্চিত করার কথা বলে।

সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফারস হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টসে অনুষ্ঠিত হয় “বাংলাদেশে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন: অগ্রগতি, প্রতিবন্ধকতা ও করণীয়” শীর্ষক জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকদের কর্মশালা।

প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) আয়োজিত এই কর্মশালায় গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটর (জিএইচএআই) সহযোগিতা করে। এতে প্রিন্ট, টেলিভিশন ও অনলাইন মিডিয়ার ২৬ জন সাংবাদিক অংশ নেন।

কর্মশালায় জানানো হয়, বিদ্যমান আইনে জন্ম ও মৃত্যুর তথ্য প্রদানের দায়িত্ব পরিবারকে দেওয়া হয়েছে এবং স্বাস্থ্য বিভাগের ভূমিকা ঐচ্ছিক। অথচ হাসপাতালভিত্তিক নিবন্ধন চালু হলে দেশের প্রায় ৬৭ শতাংশ শিশুকে নিবন্ধনের আওতায় আনা যাবে। এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের অনেক দেশ এই পদ্ধতি অনুসরণ করে ইতোমধ্যে শতভাগের কাছাকাছি নিবন্ধন অর্জন করেছে।

বক্তারা বলেন, আইন শক্তিশালীকরণ ও কার্যকর বাস্তবায়ন অত্যন্ত জরুরি। নিবন্ধন প্রক্রিয়ার জটিলতা, জনবল সংকট, প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা ও স্বাস্থ্য খাতের দুর্বল সমন্বয় বড় প্রতিবন্ধক হিসেবে কাজ করছে।

জিএইচএআই বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড মুহাম্মাদ রূহুল কুদ্দুস বলেন, “২০৩০ সালের মধ্যে শতভাগ জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের লক্ষ্যে স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রকে আইনগত দায়িত্ব প্রদান জরুরি।”

বক্তারা উল্লেখ করেন, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন নাগরিকত্ব, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, উত্তরাধিকার ও ভোটাধিকারসহ মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করে এবং জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা, বাজেট প্রণয়ন ও জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন ভাইটাল স্ট্র্যাটেজিস’র কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটর মো. নজরুল ইসলাম, আত্মা’র কনভেনর লিটন হায়দার, নাদিরা কিরণ, প্রজ্ঞা’র নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের। মুক্ত আলোচনা সঞ্চালনা করেন চ্যানেল আই-এর চিফ নিউজ এডিটর মীর মাসরুর জামান। বিষয়ভিত্তিক উপস্থাপনা তুলে ধরেন হাসান শাহরিয়ার ও মাশিয়াত আবেদিন।

অর্থসূচক/

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.