দক্ষিণ এশিয়ার আট দেশের মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহারে বাংলাদেশের অবস্থান ষষ্ঠ। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যার দিক থেকে বরাবরই প্রতিযোগী দেশের তুলনায় বাংলাদেশ পিছিয়ে।
দেশে ইন্টারনেটের উচ্চ মূল্য, অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা, ডিজিটাল সাক্ষরতাসহ নানা কারণে এ খাতে ধীরগতি। ২০২৩ সালের হিসাবে, দেশে প্রতি ১০০ জনের মধ্যে প্রায় ৪৪ জন ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন। প্রতিবেশী দেশ ভারতে প্রতি ১০০ জনে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন ৫৫ জন।
সম্প্রতি প্রকাশিত এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর অর্থনৈতিক ও সামাজিক খাতের সূচক নিয়ে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে এডিবি।
এডিবির প্রতিবেদন অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর তালিকায় সর্বনিম্ন অবস্থানে আছে আফগানিস্তান। দেশটিতে ১০০ জনের মধ্যে মাত্র ১৭ জন ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। পাকিস্তানে প্রতি ১০০ জনে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ২৭ জন। বাংলাদেশের পরই পাকিস্তানের অবস্থান।
এডিবির প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ইন্টারনেট ব্যবহার করেন ভুটানের জনগণ। ২০২৩ সালের হিসাবে ভুটানে ১০০ জনের মধ্যে ৮৮ জন ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। মালদ্বীপে এই সংখ্যা ৮৪।
দেশের মোট জনসংখ্যার চেয়ে মুঠোফোনের সক্রিয় গ্রাহক বা সিম ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেশি, অর্থাৎ দেশে অনেকেই একাধিক মোবাইল অপারেটরের সেবা নেন। এডিবির প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে দক্ষিণ এশিয়ার আট দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গ্রাহক ছিল শ্রীলঙ্কায়। প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ১৪২ জন (একজন একাধিক মোবাইল অপারেটরের সেবা নেন) সেবা নিচ্ছেন। সেই হিসাবে বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ। প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ১১৪ জন মোবাইল অপারেটরের সেবা নিচ্ছেন। সবচেয়ে কম সেবা গ্রহণ করেন আফগানিস্তানের মানুষেরা—প্রতি ১০০ জনে ৫৫ জন।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, দক্ষিণ এশিয়ার আট দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মোবাইল বা মুঠোফোন ব্যবহার করে ভারত। দেশটিতে ২০২৩ সালের হিসাবে ১১৫ কোটি ৮৫ লাখ মুঠোফোন ব্যবহারকারী আছেন। মুঠোফোন ব্যবহারকারীদের সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। দেশে মুঠোফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৯ কোটি ৬১ লাখ। এরপর তৃতীয় অবস্থানে পাকিস্তান। দেশটির মোট মুঠোফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৮ কোটি ৮৪ লাখ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর হিসেবে প্রথম অবস্থানে আছে ভারত। এরপরই আছে বাংলাদেশ। ২০২৩ সালে প্রায় ৩ কোটি ৯৫ লাখ ভারতীয় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন। বাংলাদেশে সেই সংখ্যা ১ কোটি ৩৫ লাখ। তবে এলটিই (লং টার্ম ইভল্যুশন) বা ফোর–জি সেবার আওতায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশের মধ্যে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছে মালদ্বীপ। দেশটির পুরো জনগণের ১০০ শতাংশই ফোর–জি ইন্টারনেট সেবার আওতায় রয়েছে। এরপর দ্বিতীয় অবস্থানে আছে বাংলাদেশে। বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৯৮ দশমিক ৯ শতাংশ মানুষ ফোর–জি সেবার আওতায় আছে। এই সূচকে তৃতীয় অবস্থানে আছে ভারত। তাদের ৯৮ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ ফোরজি ইন্টারনেট সেবার আওতাভুক্ত।
অর্থসূচক/
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.