যুক্তরাষ্ট্রে হুনদাই কারখানায় অভিযান, প্রায় ৫০০ কর্মী আটক

যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যে দক্ষিণ কোরিয়াভিত্তিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হুনদাইয়ের একটি কারখানায় অভিযান চালিয়ে প্রায় ৫০০ জন কর্মীকে আটক করেছে মার্কিন কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ও অভিবাসন কর্তৃপক্ষের (আইসিই) যৌথ অভিযানে এই কর্মীদের আটক করা হয়।

আইসিই জানিয়েছে, অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান বা বেআইনিভাবে কাজ করার অভিযোগে ৪৭৫ জনকে আটক করা হয়েছে। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে প্রায় ৩০০ জনই দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিক। বর্তমানে তাদের জর্জিয়ার ফকস্টনে অবস্থিত একটি আইসিই কেন্দ্রে রাখা হয়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, মার্কিন কর্মকর্তারা হুনদাই কর্মীদের সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে তল্লাশির বিষয়ে অবহিত করছেন।

এই ঘটনায় উদ্বেগ ও দুঃখ প্রকাশ করেছে দক্ষিণ কোরিয়া। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মার্কিন দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের নাগরিকদের অধিকার সুরক্ষার আহ্বান জানানো হয়েছে। এছাড়া, কূটনৈতিক আলোচনার জন্য শিগগিরই প্রতিনিধি দল পাঠানো হবে।

দক্ষিণ কোরিয়ার বক্তব্য, যুক্তরাষ্ট্রে আইন প্রয়োগের সময় বিদেশি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর অর্থনৈতিক কার্যক্রম এবং সংশ্লিষ্ট নাগরিকদের অধিকার যেন ক্ষুণ্ন না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকা প্রয়োজন।

হোমল্যান্ড সিকিউরিটির কর্মকর্তারা জানান, কারখানাটিতে অবৈধ নিয়োগ এবং গুরুতর ফেডারেল অপরাধের অভিযোগের ভিত্তিতে আদালতের সার্চ ওয়ারেন্ট নিয়ে অভিযান চালানো হয়। সংস্থাটির কর্মকর্তা স্টিভ শ্র্যাংক বলেন, “এটি সাধারণ কোনো অভিবাসন অভিযান নয়। কয়েক মাস তদন্ত করে প্রমাণ সংগ্রহের পর এই অভিযান চালানো হয়েছে। এটি হোমল্যান্ড সিকিউরিটির ইতিহাসে একক স্থানে পরিচালিত সবচেয়ে বড় অভিযান।”

এই অভিযানকে কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ নীতিতে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ, এটি একদিকে অবৈধ অভিবাসন দমন নীতিকে বাস্তবায়ন করলেও, অন্যদিকে দেশজ উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর লক্ষ্যকে প্রভাবিত করতে পারে। তাছাড়া দক্ষিণ কোরিয়ার মতো ঘনিষ্ঠ মিত্রের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কেও টানাপোড়েন সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, “আটক ব্যক্তিরা অবৈধ অভিবাসী ছিল, আর আইসিই তাদের কাজ করেছে।” তিনি আরও দাবি করেন, “ওই কর্মীরা সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সময় যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছিল এবং তারা অবৈধভাবে এসেছিল।”

অন্যদিকে, হুনদাই এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা পুরো পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, আটক ব্যক্তিদের কেউই সরাসরি হুনদাইয়ের কর্মী নন।

অর্থসূচক/

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.