রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলের মরদেহ কবর থেকে তুলে পোড়ানোর ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ ধরনের বর্বরতা কোনো অবস্থাতেই সহ্য করা হবে না বলেও সতর্ক করা হয়েছে। পাশাপাশি এ ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনার কথাও বলা হয়।
শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে এ ঘটনার নিন্দা জানায় অন্তর্বর্তী সরকার।
এতে বলা হয়, গোয়ালন্দে নুরুল হক মোল্লা ওরফে নুরাল পাগলা কবর অপবিত্র করা এবং দেহ পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে সরকার। এই অমানবিক ও ঘৃণ্য কাজ মূল্যবোধ, আইন এবং সভ্য সমাজের প্রতি সরাসরি অবমাননা। এই ধরনের বর্বরতা কোনও অবস্থাতেই সহ্য করা হবে না। আইনের শাসন সমুন্নত রাখা ও মানুষের জীবনের পবিত্রতা রক্ষা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এতে আরও বলা হয়, এই জঘন্য অপরাধে জড়িতদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা হবে। কোনও ব্যক্তি বা গোষ্ঠী জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে নয়। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক এবং কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার বিকেলে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে ইমাম মাহদী দাবি করা নুরাল পাগলের মরদেহ কবর থেকে তুলে পুড়িয়ে দেয় ‘তৌহিদী জনতা’। উপজেলার ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পদ্মার মোড় এলাকায় প্রকাশ্যে পেট্রোল ঢেলে মরদেহ পুড়িয়ে দেয়া হয়।
এর আগে, জুমা নামাজের পর পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী শহীদ মহিউদ্দিন আনসার ক্লাবে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করে মুসল্লীরা। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পুলিশের দুইটি গাড়ি ভাঙচুর করে। একপর্যায়ে নুরাল পাগলের বাড়ী ও দরবারের গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করে তারা। এতে দরবারের ভক্তসহ প্রায় অর্ধশত মানুষ আহত হয়েছেন। পরে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এরপর সেনাবাহিনী ও র্যাব ঘটনাস্থলে পৌঁছালে বিক্ষুব্ধরা বাড়ীর অদূরে অবস্থান নেয়। এ সময় ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু করলেও তারা বাঁধার মুখে পড়েন। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধরা আবারও দরবারে প্রবেশ করে নুরাল পাগলের কবর থেকে কফিনসহ মরদেহ তুলে নিয়ে পদ্মার মোড় এলাকায় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়।
এদিকে, এ ঘটনায় রাসেল মোল্লা (২৮) নামে এক যুবক নিহতের খবর পাওয়া গেলেও প্রশাসন পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়নি।



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.