বিগত এক দশকে দেশের শহর এলাকায় গরিব মানুষের সংখ্যা ৫ লাখ বেড়েছে। ২০১০ সালে শহরে গরিব মানুষের সংখ্যা ছিল ৭৪ লাখ, যা ২০২২ সালে বেড়ে দাঁড়ায় ৭৯ লাখে।
মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে তিন দিনব্যাপী ‘ন্যাশনাল কনফারেন্স অন সোশ্যাল প্রোটেকশন ২০২৫’ বা ‘সামাজিক সুরক্ষাবিষয়ক জাতীয় সম্মেলন’-এর দ্বিতীয় দিনে এমন তথ্য উঠে আসে।
শহুরে দারিদ্র্যবিষয়ক সেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব রেজাউল মাকছুদ জাহেদী। এতে উপস্থাপনা তুলে ধরেন রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের (র্যাপিড) চেয়ারম্যান এম এ রাজ্জাক।
ওই অধিবেশনে আরও জানানো হয়, বিগত এক যুগে দরিদ্র এবং ঝুঁকিতে থাকা মানুষের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ২১ লাখ। তবে শহরাঞ্চলে দারিদ্র্য দ্রুত বাড়লেও সামাজিক নিরাপত্তাব্যবস্থা ততটা বাড়ছে না; বরং গ্রামাঞ্চলে দেশের মোট সামাজিক সুরক্ষা খাতে বরাদ্দের প্রায় ৮০ শতাংশ টাকা খরচ হয়।
উপস্থাপনায় এম এ রাজ্জাক বলেন, “গ্রামে মানুষ কমছে, বাড়ছে শহরে। ২০৪০ সাল নাগাদ শহরের জনসংখ্যা গ্রামের জনসংখ্যাকে ছাড়িয়ে যাবে। উন্নয়নের মডেলে শহরে মানুষ বাড়ে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে আমাদের মোট সামাজিক সুরক্ষার ৮০ শতাংশ যাচ্ছে গ্রামে। শহরে খোলা বাজারে পণ্য বিক্রি ছাড়া তেমন কোনো উদ্যোগ নেই।”
সামাজিক সুরক্ষা ব্যয়ের পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, “গত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সামাজিক সুরক্ষার মাত্র ৪ শতাংশ শহরের দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দ ছিল। গ্রামীণ এলাকায় বরাদ্দ ছিল ২৭ শতাংশ। ৬৮ শতাংশ বরাদ্দ ছিল গ্রাম-শহর উভয় এলাকায়।”
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব রেজাউল মাকছুদ জাহেদী বলেন, “আমাদের ৩৩০টি পৌরসভা, সিটি করপোরেশনসহ মোট ৫৬০টি আরবান সেন্টার রয়েছে। এসব এলাকায় মানুষের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং নদীভাঙনের কবলে পড়ে মানুষ শহরমুখী হচ্ছে।
ফলে শহরের বস্তিবাসীর জন্য স্বাস্থ্য ও পয়োনিষ্কাশন নিশ্চিত করা খুবই জটিল হয়ে পড়েছে। এসব সেন্টারের মানুষের সামাজিক সুরক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবেশ নিশ্চিতে আমরা বছরে এক বিলিয়ন ডলার (১০০ কোটি ডলার) ব্যয় করছি। অথচ আমাদের প্রয়োজন ৭-৮ বিলিয়ন ডলার। শহরে দরিদ্রদের জন্যও আমাদের কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে।”
অর্থসূচক/



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.