ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে বেলজিয়াম, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ১২ দফা নিষেধাজ্ঞা

চলতি মাসের শেষের দিকে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) অধিবেশনে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেবে বেলজিয়াম। এক্স (সাবেক টুইটার) প্ল্যাটফর্মে দেওয়া এক পোস্টে এ ঘোষণা দিয়েছেন বেলজিয়ামের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ম্যাক্সিম প্রেভো।

মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

এক্স পোস্টে পররাষ্ট্রমন্ত্রী লেখেন, ‘‘জাতিসংঘ অধিবেশনে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে বেলজিয়াম। আর ইসরায়েলি সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।’’

তিনি জানান, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ১২টি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে বেলজিয়াম। এর মধ্যে রয়েছে অধিকৃত পশ্চিম তীরের অবৈধ বসতি থেকে পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করা এবং ইসরায়েলি কোম্পানির সঙ্গে সরকারি ক্রয় নীতির পুনর্বিবেচনা।

মধ্যপন্থী লেস এনগেজেস পার্টির এই নেতা বলেন, ফিলিস্তিনে, বিশেষ করে গাজায় চলমান মানবিক বিপর্যয়ের প্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেলজিয়াম। তবে গাজা থেকে শেষ বন্দির মুক্তি এবং ফিলিস্তিন পরিচালনায় হামাসের কোনো ভূমিকা না রাখার শর্তে স্বীকৃতি কার্যকর হবে বলে জানান তিনি।

ফিলিস্তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বেলজিয়ামের এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে এবং অন্যান্য দেশকেও একই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। দেশটি বলেছে, গাজায় গণহত্যা, বাস্তুচ্যুতি, অনাহার ও ভূমি দখল বন্ধে বাস্তব পদক্ষেপের পাশাপাশি রাজনৈতিক সমাধানের পথ খোলার প্রত্যাশায় এই স্বীকৃতির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেলজিয়াম।

বেলজিয়ামের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘ প্রস্তাবের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এটি দ্বি-রাষ্ট্র ভিত্তিক সমাধান ও শান্তি অর্জনে সহায়ক হবে।

এ বিষয়ে ইসরায়েলি সরকার তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য না করলেও, ইসরায়েলের বিরোধী দল ইসরায়েল বেইতেনুর নেতা আভিগদর লিবারম্যান বলেন, এই সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক ব্যর্থতার ফল।

তিনি এক্সে লেখেন, ‘‘নেতানিয়াহুর রাজনৈতিক অদক্ষতার কারণে আমাদের চোখের সামনেই একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে।’’

এর আগে জুলাইয়ের শেষ দিকে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ঘোষণা দেন, জাতিসংঘ অধিবেশনের সময় ফ্রান্স ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেবে।

এই সিদ্ধান্ত ইউরোপজুড়ে একটি নতুন গতির সূচনা করেছে বলে জানানো হয়েছে। ইউরোপীয় দেশগুলোর ফিলিস্তিন স্বীকৃতি দেওয়ার মানে হলো—তারা ১৯৬৭-পূর্ব সীমান্ত অনুযায়ী পশ্চিম তীর, গাজা ও পূর্ব জেরুজালেমসহ ফিলিস্তিনের সার্বভৌমত্বকে স্বীকৃতি দেবে এবং পূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করবে।

বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, আরও ইউরোপীয় দেশ স্বীকৃতি দিলে তা লুক্সেমবার্গ ও ইতালির ওপর কূটনৈতিক চাপ বৃদ্ধি করবে।

আগামী ২২ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্রের স্বীকৃতির বিষয়ে যৌথ বৈঠক আয়োজন করবে ফ্রান্স ও সৌদি আরব। এছাড়া অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও যুক্তরাজ্যও এ মাসেই শর্তসাপেক্ষে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে।

অর্থসূচক/

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.