বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যা মামলায় সূচনা বক্তব্য উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচার শুরু হয়েছে।
বুধবার (২৭ আগস্ট) চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ তে মামলাটির বিচার শুরু হয়েছে। ট্রাইব্যুনালে এ মামলার সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। এরপর আবু সাঈদকে গুলি করার দুটি ভিডিও ট্রাইব্যুনালে প্রদর্শন করা হয়। এ সময় ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন মনিটরে ছেলেকে গুলির দৃশ্যের ভিডিও দেখে বারবার চোখ মুছছিলেন।
পরে প্রসিকিউশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) এই মামলায় প্রথম সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করেন ট্রাইব্যুনাল।
এর আগে, আবু সাঈদ হত্যা মামলায় গত ২৪ জুন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় তদন্ত সংস্থা। এ ঘটনায় মোট ৩০ জনকে আসামি করা হয়। পরে গত ৩০ জুন মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল। এছাড়া পলাতকদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
গত ১৩ জুলাই এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্য মামলায় গ্রেফতার রাসেল ও পারভেজকে ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ দেওয়া হয়। একইসঙ্গে পলাতক ২৪ জনকে গ্রেফতারের মাধ্যমে আদালতে হাজির করতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-২।
গত ২২ জুলাই এ মামলায় বেরোবির সাবেক ভিসি, রংপুর মহানগর পুলিশের সাবেক কমিশনারসহ পলাতক ২৪ আসামির পক্ষে স্টেট ডিফেন্স নিয়োগ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।
পরে প্রসিকিউটর প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম বলেছিলেন, এ মামলায় ৩০ আসামির মধ্যে এখনও ২৪ জন পলাতক। তাদের বিরুদ্ধে দুটি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। তবে আদালতে হাজির না হওয়ায় পলাতক হিসেবেই এসব আসামির বিচারকাজ চলবে। আর গ্রেফতার ছয় জনের দুই জন এখনও আইনজীবী নিয়োগ দেননি। তাদের ব্যাপারে ট্রাইব্যুনাল জানতে চেয়েছেন। এছাড়া পলাতক ২৪ জনের পক্ষে সরকারি খরচে চার জন স্টেট ডিফেন্স নিয়োগ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। অর্থাৎ ছয় জনের জন্য একজন করে আইনজীবী লড়বেন। গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন নির্মূলে আওয়ামী লীগ সরকার, তার দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠিত করে বলে, একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে।



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.