শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ২৪ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ

মানবতাবিরোধী অপরাধ

জুলাই -অগাস্টের গণ অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে আজ জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের পরিচালকসহ মোট পাঁচজন সাক্ষ্য দিয়েছেন।

সোমবার সকাল সাড়ে এগারোটার দিকে বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। পরে বিকেলে শেষ হয় অষ্টম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ।

ট্রাইব্যুনালে এই মামলায় প্রসিকিউশনের পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এসএইচ তামিম শুনানি করেন। এই সময় অপর প্রসিকিউটররা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে এই মামলায় পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন। আর এই মামলায় গ্রেফতার হয়ে পরে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।

জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের পরিচালক খায়ের আহমেদ চৌধুরী এবং সহকারী অধ্যাপক জাকিয়া সুলতানা নীলা আজ সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ মামলার আসামি পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের উপস্থিতিতে এই সাক্ষ্য গ্রহণ হয়।

এই মামলায় গত সাতদিনে নিহতদের পরিবারের সদস্য ও জুলাই হত্যাযজ্ঞের প্রত্যক্ষদর্শী ১৯ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। আজকে যারা সাক্ষী দিয়েছেন তাদেরসহ এখন পর্যন্ত মোট ২৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন ট্রাইব্যুনালে। এ মামলায় মোট সাক্ষী ৮১ জন। সাক্ষীদের সবাই শেখ হাসিনাসহ জুলাই হত্যাযজ্ঞে জড়িতদের যথাযথ বিচার ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ট্রাইব্যুনালে।

মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজিপির বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। এক পর্যায়ে এই মামলায় দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্‌ঘাটনে (অ্যাপ্রোভার) রাজসাক্ষী হতে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের আবেদন মঞ্জুর করেন ট্র্যাইব্যুনাল।

এই মামলাটি ছাড়াও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে গুম-খুনের ঘটনায় তাকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হয়েছে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়।

গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, এর দলীয় ক্যাডার ও সরকারের অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে একের পর এক অভিযোগ জমা পড়ে। দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এসব অপরাধের বিচার কাজ চলছে।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.