বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণ প্রক্রিয়া আরও তিন থেকে পাঁচ বছর পিছিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে দেশের ১৬টি শীর্ষ ব্যবসায়ী ও শিল্প-সংগঠন। এত দিন সংগঠনগুলো আলাদাভাবে এ দাবি জানালেও এবার একযোগে তারা এই প্রস্তাব উত্থাপন করেছে।
রোববার (২৪ আগস্ট) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ‘এলডিসি থেকে উত্তরণে চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এই যৌথ দাবির কথা তুলে ধরেন সংগঠনগুলোর নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স বাংলাদেশ (আইসিসিবি)-এর সভাপতি মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন, “আমরা এলডিসি থেকে উত্তরণকে স্বাগত জানাই। তবে সফল ও টেকসই উত্তরণের জন্য অতিরিক্ত তিন থেকে পাঁচ বছরের সময় প্রয়োজন।”
উল্লেখ্য, জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০২৬ সালের ২৪ নভেম্বর এলডিসি থেকে উত্তরণ ঘটবে বাংলাদেশের। অর্থাৎ সময় হাতে আছে মাত্র ১৫ মাস। এ সময়সীমাকে অপর্যাপ্ত বলে মনে করছেন ব্যবসায়ী নেতারা।
এলডিসি উত্তরণ পেছানোর যৌথ দাবি জানানো সংগঠনগুলো হলো: আইসিসিবি, এফবিসিসিআই, বিসিআই, বিটিএমএ, ডিসিসিআই, বিএবি, বিএপিআই, এমসিসিআই, বিআইএ, বিএপিএলসি, সিসিসিআই, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, এলএফএমইএবি, এফআইসিসিআই এবং বাংলাদেশ সেমিকন্ডাক্টর ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন।
মাহবুবুর রহমান বলেন, অন্তত পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ কারণে উত্তরণ পেছানো জরুরি হয়ে পড়েছে।
এর মধ্যে রয়েছে—
যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক সুবিধা হারানোর ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য, আসিয়ান ও উপসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) নিশ্চিত করার সময় পাওয়া।
ওষুধ, আইটি, চামড়া, কৃষি প্রক্রিয়াজাত ও হালকা প্রকৌশল খাতে রপ্তানিতে বৈচিত্র্য আনা।
চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের উপযোগী দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা, যেন অটোমেশন ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো প্রযুক্তিতে প্রতিযোগিতা করা যায়।
মানসম্পন্ন বৈদেশিক বিনিয়োগ (এফডিআই) আকর্ষণের প্রস্তুতি নেওয়া।
জলবায়ু অভিঘাত মোকাবিলা ও সুশাসন জোরদার করে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিরতায় টিকে থাকার সক্ষমতা অর্জন।
তিনি আরও বলেন, “যদি ২০৩২ সাল পর্যন্ত সময় পাওয়া যায়, তবে বেসরকারি খাত এবং সরকার উভয়েই প্রস্তুতির সুযোগ পাবে। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে সরকারের কাছে এই অনুরোধ জানাচ্ছি।”
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আইসিসিবির সহসভাপতি এ কে আজাদ ও নাসের এজাজ বিজয়, এমসিসিআই সভাপতি কামরান টি রহমান, ডিসিসিআই-এর সিনিয়র সহসভাপতি রেজওয়ানুল চৌধুরী, বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান, বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, বিটিএমএ সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল, বিসিআই সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী পারভেজ ও ওষুধ শিল্প মালিক সমিতির আবদুল মুক্তাদির প্রমুখ।
সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে আশা করা হচ্ছে, সরকার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করবে এবং জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনায় বিষয়টি তুলে ধরবে।
অর্থসূচক/



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.