আপত্তিকর ভিডিও সামনে আসার পর ছুটিতে বিএফআইইউ প্রধান

একাধিক আপত্তিকর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পরে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণাধীন আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান এএফএম শাহীনুল ইসলামকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

 

মঙ্গলবার এ তথ্য নিশ্চিত করে গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিএফআইইউ প্রধান ছুটিতে থাকবেন। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের একটি অংশ অবিলম্বে তাকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানোর অনুরোধ জানিয়ে গভর্নর বরাবর স্মারক লিপি দেয়।

 

গত ১৪ আগস্ট থেকে বিভিন্ন ব্যক্তির হোয়াটসঅ্যাপ ও মেসেঞ্জারে শাহীনুল ইসলামের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর ১৮ আগস্ট থেকে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন মহলে তীব্র সমালোচনা শুরু হলে ভিডিওর সত্যতা যাচাইয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য প্রযুক্তি বিভাগকে।

 

এদিকে শাহীনুল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া আপত্তিকর ভিডিওকে ভুয়া দাবি করলেও প্রাথমিকভাবে ফ্যাক্ট চেক করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই ভিডিও সঠিক বলে জানতে পেরেছে। এছাড়া বিতর্কিত পরিবহন ব্যবসায়ী এনা পরিবহনের মালিক খন্দকার এনায়েত উল্লাহর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করার পর সেই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে ১৯ কোটি টাকা উত্তোলনের সুযোগ দিয়েছেন তিনি। এক্ষেত্রে অনৈতিক কিছু হয়েছে কিনা সে বিষয়েও তদন্ত করা হবে বলে জানা গেছে।

 

জানা গেছে, গত নভেম্বর মাসে এনা পরিবহনের মালিক খন্দকার এনায়েত উল্লাহর ও তার পরিবারের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ৫০টি অ্যাকাউন্টে ১২০ কোটি টাকা ফ্রিজ করে বিএফআইইউ। তবে চলতি বছরের এপ্রিলে ব্যাংক আল-ফালাহর চারটি অ্যাকাউন্ট পুনরায় ফ্রিজ না করে প্রায় ১৯ কোটি টাকা উত্তোলনের সুযোগ দেওয়া হয়। সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী বাস থেকে দৈনিক ১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা চাঁদা হিসেবে এ অর্থ জমা করেন এমন অভিযোগ তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

 

দুদকের আবেদনে গত ২৭ মে ১২০ কোটি টাকা ফ্রিজ করার আদেশ দেন মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত। অথচ দুদক এখন জানতে পেরেছে এসব হিসাবে আছে আসলে ১০১ কোটি টাকা। অনৈতিক সুবিধার বিনিময়ে বাকি টাকা উত্তোলনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিগত সরকারের সময়ে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে আয় উপার্জন করেছেন আরও অনেককে অর্থ উত্তোলনের সুযোগ দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এসব বিষয়ে তদন্তের জন্য উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করলেও তাদের নাম প্রকাশ করেনি।

 

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর আন্দোলনের মুখে গত বছরের ৮ আগস্ট পদত্যাগে বাধ্য হন বিএফআইইউ’র তৎকালীন প্রধান মো. মাসুদ বিশ্বাস। দীর্ঘদিন খালি থাকার পর চলতি বছরের জানুয়ারিতে নিয়োগ পান শাহীনুল ইসলাম।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.