বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পঞ্চম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়েছে। পাশাপাশি পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী বুধবার (২০ আগস্ট) দিন ধার্য করেছেন ট্রাইব্যুনাল।
সোমবার (১৮ আগস্ট) চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ আদেশ দেন। এদিন বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বিকাল পৌনে ৫টা পর্যন্ত সাক্ষ্যগ্রহণ চলে, এর মাঝে কিছু সময়ের জন্য বিরতি দেওয়া হয়। মোট তিনজন সাক্ষী এদিন নিজেদের জবানবন্দি দিয়েছেন।
সাক্ষীরা হলেন- শহীদ আস-সাবুরের বাবা মো. এনাব নাজেজ জাকি, শহীদ ইমাম হাসান তাইমের ভাই রবিউল আউয়াল এবং রাজশাহীর প্রত্যক্ষদর্শী জসিম উদ্দিন।
জবানবন্দিতে এই তিনজনই জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে সংঘটিত গণহত্যার জন্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে দায়ী করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন।
জবানবন্দি শেষে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন সাক্ষীদের জেরা করেন। প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম। ফলে এ পর্যন্ত এই মামলায় মোট ১২ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন।
এর আগে গত ৬ আগস্ট রিনা মুর্মু ও একেএম মঈনুল হক নামে দুইজন প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী দেন। গত ৪ আগস্ট পঙ্গু শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল ইমরান ও দিনমজুর পারভীন সাক্ষ্য দিয়ে নিজেদের দুর্দশার জন্য শেখ হাসিনাসহ সংশ্লিষ্টদের দায়ী করে সর্বোচ্চ সাজা দাবি করেন। এই মামলার প্রথম সাক্ষী হিসেবে গত ৩ আগস্ট জবানবন্দি দিয়েছিলেন আন্দোলনে আহত খোকন চন্দ্র বর্মণ। পরে গত ১৭ আগস্ট সবজি বিক্রেতা আবদুস সামাদ, মিজান মিয়া, শিক্ষার্থী নাঈম শিকদার এবং শহীদ সাজ্জাদ হোসেন সজলের মা শাহীনা বেগম জবানবন্দি দিয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত, গত ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এবং চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। প্রসিকিউশন এই তিনজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ এনেছে। আট হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার বিশাল এই অভিযোগপত্রে তথ্যসূত্র, জব্দ তালিকা, দালিলিক প্রমাণ এবং শহীদদের তালিকা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই মামলায় মোট ৮১ জন সাক্ষী রয়েছেন।



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.