মিয়ানমারে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা

মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকার দেশটিতে আগামী ২৮ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছে। সোমবার দেশটির ইউনিয়ন নির্বাচন কমিশন এক বিবৃতিতে জানায়, এদিন থেকেই বহু দলীয় গণতান্ত্রিক সাধারণ নির্বাচনের প্রথম ধাপ শুরু হবে। পরবর্তী ধাপগুলোর তারিখ পরে জানানো হবে।

সোমবার (১৮ আগস্ট) এএফপির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

তবে গৃহযুদ্ধ, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং বিরোধীদের প্রতিরোধের হুমকির মাঝে এই নির্বাচনকে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা ‘প্রহসন’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। তারা বলছেন, এই নির্বাচনের লক্ষ্য সেনাপ্রধান মিন অং হ্লেইংয়ের ক্ষমতা ধরে রাখা।

২০২১ সালে অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করে। এরপর থেকে শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধে বহু মানুষ নিহত ও বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। জাতিসংঘের মতে, ৩৫ লাখের বেশি মানুষ গৃহহীন হয়েছেন এবং দেশটির অর্ধেক জনগণ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছে।

দেশটির বিভিন্ন অঞ্চল বর্তমানে বিদ্রোহী ও জাতিগত গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এদের অনেকেই নিজেদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় নির্বাচন ঠেকানোর ঘোষণা দিয়েছে। অন্যদিকে, গণতন্ত্রপন্থি বিরোধীদলগুলো নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে।

জান্তা সরকার বলছে, সংঘাতের অবসান ঘটাতে নির্বাচনই একমাত্র পথ এবং বিরোধী গোষ্ঠীগুলোকে অস্ত্র জমা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। অস্ত্র জমা দিলে নগদ পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয়দের মতে, এই নির্বাচন জনগণের জন্য নয়, বরং সামরিক স্বৈরশাসকদের ক্ষমতায় রাখার জন্য। তবে কিছু সাধারণ মানুষ শান্তির প্রত্যাশায় নির্বাচনকে ইতিবাচক দৃষ্টিতেও দেখছেন।

গত জুলাইয়ে নতুন একটি নির্বাচনি আইন পাস হয়েছে, যেখানে সমালোচনা বা প্রতিবাদকারীদের সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং নির্বাচন সংক্রান্ত অপরাধে ২০ বছরের সাজার বিধান রাখা হয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই নির্বাচন সামরিক শাসনকে নতুনভাবে বৈধতা দেওয়ার একটি প্রক্রিয়া। তবে সংঘাত-পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর আশঙ্কা, নির্বাচনের সময় দেশে সহিংসতা বাড়তে পারে।

সামরিক জান্তা নির্বাচন প্রস্তুতির অংশ হিসেবে গত বছর জনশুমারি চালায়, তবে ১ কোটি ৯০ লাখের বেশি মানুষের তথ্য সংগ্রহে ব্যর্থ হয়। বর্তমানে মিন অং হ্লেইং ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

অর্থসূচক/

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.