যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে গৃহহীনদের একটি বড় তাঁবু শিবির উচ্ছেদ করেছে শহর কর্তৃপক্ষ। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টের চার দিনের মাথায় এই উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু হয়। ট্রাম্প তাঁর ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে ওই তাঁবুগুলোর ছবি পোস্ট করে মন্তব্য করেন, “এই গৃহহীনদের অবিলম্বে এখান থেকে সরে যেতে হবে।”
এরপর বৃহস্পতিবার শহর কর্তৃপক্ষ বুলডোজার দিয়ে ওই তাঁবুগুলো গুঁড়িয়ে দেয়। এ ঘটনায় অন্তত ১১ জন গৃহহীন আশ্রয় হারান। যাদের মধ্যে রয়েছেন ৬৬ বছর বয়সী বিল থিওডি। তিনি বলেন, “ট্রাম্প গাড়ির জানালা দিয়ে আমার ছবি তুলে তা নেতিবাচকভাবে ব্যবহার করেছেন। এটা তার রাজনৈতিক হাতিয়ার।”
হোয়াইট হাউস থেকে মাত্র ১০ মিনিটের দূরত্বে শিবিরটি ছিল রাজধানীর অন্যতম বড় গৃহহীন তাঁবু শিবির। বিবিসি যাচাই করে জানিয়েছে, ছবিগুলো ওয়াশিংটনের একটি সড়কের পাশেই তোলা, যেখান থেকে গৃহহীনদের সরে যেতে বলা হয়েছিল।
সাবেক নির্মাণ শ্রমিক থিওডি বলেন, “আমরা জায়গাটা পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করি। প্রেসিডেন্ট বা কাউকে অসম্মান করতে চাই না। কিন্তু আমাদের জীবনযাত্রার বিকল্প কি আছে?” তিনি এখন দাতার সহায়তায় ভার্জিনিয়ার একটি মোটেলে অস্থায়ীভাবে আশ্রয় নিয়েছেন।
গৃহহীনদের সহায়তাকারী সংস্থাগুলো বলছে, এভাবে হঠাৎ উচ্ছেদ মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল। অনেকে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে চান না, কারণ সেগুলো নিরাপদ বা উপযোগী নয় বলে অভিযোগ।
ওয়াশিংটনের স্বাস্থ্য ও মানবসেবা বিভাগের ডেপুটি মেয়র ওয়েন টারনেজ স্বীকার করেছেন, ট্রাম্পের ঘোষণার পর এবার উচ্ছেদ প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন হয়েছে।
চলতি বছরের শুরুর তথ্য অনুযায়ী, ওয়াশিংটন ডিসিতে গৃহহীন মানুষের সংখ্যা প্রায় ৫ হাজার ১৩৮ জন। এর মধ্যে ৮০০ জন সম্পূর্ণ খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছেন। বাকিরা কোনো না কোনো অস্থায়ী আশ্রয়ে রয়েছেন।
ট্রাম্প ইতিমধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি পার্ক ও উন্মুক্ত স্থানগুলো থেকে গৃহহীনদের শিবিরগুলো সরিয়ে ফেলবেন। তার এই নীতিকে অনেকেই মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির ঘাটতি ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন।
অর্থসূচক/



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.