বাংলাদেশের বাণিজ্য-বিনিয়োগে বড় বাধা এফটিএর অনুপস্থিতি: গোলটেবিল আলোচনায় বিশ্লেষকরা

বাংলাদেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর অন্যতম প্রধান বাধা মুক্তবাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ)-র অনুপস্থিতি বলে মত দিয়েছেন অর্থনীতি ও শিল্প খাত সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা বা দরকষাকষির কৌশল নেই, যা দেশের শিল্প ও বাণিজ্যের জন্য ভবিষ্যতে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

শনিবার (১৬ আগস্ট) বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই) আয়োজিত ‘ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি ও ট্রেড ট্রানজিশন চ্যালেঞ্জেস: বেস্ট অ্যাপ্রোচেস ফর লোকাল ইন্ডাস্ট্রি অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় এই মত উঠে আসে।

বক্তারা বলেন, বৈশ্বিক বাণিজ্যে এখন রক্ষণশীলতা ও সুরক্ষা নীতির প্রভাব স্পষ্ট। এই পরিস্থিতিতে দেশগুলোর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বা আঞ্চলিক সহযোগিতা ছাড়া এগিয়ে যাওয়া কঠিন। তাই এফটিএ জরুরি, তবে তা হতে হবে সুপরিকল্পিত ও টেকসই কাঠামোর মধ্যে।

আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ) বলেন, “নতুন শুল্ক আরোপের ঘোষণা আসার পরে অনেক ক্ষমতাধর দেশ নিজেদের সুরক্ষা নীতির দিকে যাচ্ছে। আমাদের কী অবস্থান হবে, তা পরিষ্কার করে নীতিমালা নিতে হবে। কাদের সঙ্গে টেকসই বাণিজ্য করা সম্ভব তা নির্ধারণ করে এফটিএ পরিকল্পনা করতে হবে।”

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেন, “আগে দুর্বল দেশগুলো বৈশ্বিক বাণিজ্য থেকে সুফল পেত। কিন্তু এখন ক্ষমতাশালী দেশগুলোর প্রভাব বেড়েছে। রক্ষণশীল বাণিজ্যনীতি বাড়ছে। তাই এখন এফটিএ করেই ব্যবসা করতে হবে। এজন্য আমাদের নেগোশিয়েশন স্কিল বাড়াতে হবে।”

মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “বাংলাদেশের এফটিএ নিয়ে এখনো কোনো পলিসি নেই। কোথায় চুক্তি করব আর কোথায় করব না, তা স্পষ্ট নয়। আবার অনেক ক্ষেত্রে এফটিএ করলে সরকারের রাজস্ব কমে যায়, এটিও চিন্তার বিষয়।”

আলোচনায় আরও অংশ নেন- পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. মাশরুর রিয়াজ, ট্যারিফ কমিশনের সাবেক সদস্য ড. মোস্তফা আবিদ খান, এমসিসিআই সভাপতি কামরান তানভিরুর রহমান প্রমুখ।

বক্তারা আরও বলেন, দেশের স্থানীয় শিল্পকে বাঁচাতে এবং আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে পরিকল্পিত মুক্তবাণিজ্য চুক্তি ও কৌশলগত নীতি গ্রহণ জরুরি।

অর্থসূচক/

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.