মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের মধ্যেও ভারতের অর্থনীতির জন্য আশার আলো দেখা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক ঋণমান নির্ধারণকারী সংস্থা এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল ১৮ বছর পর ভারতের সার্বভৌম ঋণমান বিবিবি মাইনাস থেকে উন্নীত করে বিবিবি করেছে।
সংস্থাটি জানায়, ভারতের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ভবিষ্যতে স্থিতিশীল থাকবে এবং পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে ঋণমান আরও বাড়তে পারে।
এসঅ্যান্ডপি গ্লোবালের পরিচালক ই ফ্যাম ফুয়া জানিয়েছেন, ভারতের আর্থিক ঘাটতি উল্লেখযোগ্যভাবে কমলে কিংবা কেন্দ্রীয় সরকারের নিট ঋণ পরিবর্তন জিডিপির ৬ শতাংশের নিচে নামলে ঋণমান আরও বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে।
গত ফেব্রুয়ারিতে বাজেট উপস্থাপনকালে ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ জানান, ২০২৫ অর্থবছরে রাজস্ব ঘাটতি জিডিপির ৪ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০২৬ সালে ৪ দশমিক ৪ শতাংশে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা রয়েছে।
এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল মনে করে, মার্কিন শুল্ক ভারতীয় অর্থনীতিতে বড় প্রভাব ফেলবে না। সংস্থাটি বলেছে, ভারতের অর্থনীতির ৬০ শতাংশই ঘরোয়া ভোক্তাদের ওপর নির্ভরশীল। ফলে যুক্তরাষ্ট্র ভারতের অন্যতম প্রধান বাণিজ্য অংশীদার হলেও, ৫০ শতাংশ শুল্ক ভারতের প্রবৃদ্ধিকে বড় ধাক্কা দিতে পারবে না।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ভারত আর্থিক খাতের সংহতকরণ, অবকাঠামো উন্নয়ন, ও আর্থিক স্থিতিশীলতায় গুরুত্ব দিচ্ছে। যার ফলে ঋণ ব্যবস্থায় ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
২০২২ থেকে ২০২৪ অর্থবছরে ভারতের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার গড়ে ৮ দশমিক ৮ শতাংশ, যা এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মধ্যে সর্বোচ্চ। আগামী কয়েক বছরেও ভারতের অর্থনীতি বার্ষিক ৬ দশমিক ৮ শতাংশ হারে বাড়বে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে এসঅ্যান্ডপি।
২০২৪ সালের মে মাসে ভারতের অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ‘ইতিবাচক’ করা হয়। এসঅ্যান্ডপি জানায়, ঋণমান উন্নয়নের প্রধান কারণ হচ্ছে শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি, সরকারি ব্যয়ের মানোন্নয়ন এবং রাজস্ব শৃঙ্খলা বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি।
তবে ঝুঁকির দিকও তুলে ধরা হয়েছে। রাজনৈতিক অঙ্গীকার দুর্বল হলে বা কাঠামোগতভাবে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি মন্থর হলে ঋণের টেকসই অবস্থা ব্যাহত হতে পারে বলে সতর্ক করেছে সংস্থাটি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এর আগে ভারতীয় পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিলেন। এরপর রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল কেনার কারণে আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়। ফলে মোট শুল্ক দাঁড়ায় ৫০ শতাংশে।
তবে এসঅ্যান্ডপি গ্লোবালের মতে, ভারত শুল্কের এই চাপ সামাল দিতে পারবে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ধারাও অব্যাহত থাকবে।
অর্থসূচক/



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.