এভারেস্টে চাপ কমাতে ৩৬ শতাংশ ফি বাড়াচ্ছে নেপাল

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পৃথিবীর সর্বোচ্চ চূড়া এভারেস্টে অতিরিক্ত ভিড় ও দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পর্বতারোহণে নতুন নীতি চালু করছে নেপাল। নতুন নীতিতে এভারেস্টে ওঠার ফি বাড়ানো হয়েছে, একই সঙ্গে বিকল্প ৯৭টি চূড়ায় বিনামূল্যে ওঠার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।

অন্যান্য মৌসুমেও প্রায় ৩৬ শতাংশ হারে ফি বাড়ানো হচ্ছে। শরৎকালে এভারেস্টে ওঠার ফি সাড়ে পাঁচ হাজার থেকে বেড়ে সাড়ে সাত হাজার ডলার এবং শীত ও বর্ষাকালে দুই হাজার ৭৫০ থেকে বেড়ে তিন হাজার ৭৫০ ডলার করা হয়েছে।

বুধবার (১৩ আগস্ট) বিবিসি ও এএফপির বরাতে জানা গেছে, আগামী সেপ্টেম্বর থেকে ভরা মৌসুমে (এপ্রিল-মে) এভারেস্টে ওঠার ফি ১১ হাজার ডলার থেকে বাড়িয়ে ১৫ হাজার ডলার করা হচ্ছে। এটি প্রায় এক দশক পর প্রথমবারের মতো ফি বৃদ্ধির উদ্যোগ।

২০২৩ সালে পর্বতারোহণ ফি বাবদ প্রায় ৫৯ লাখ মার্কিন ডলার আয় করে নেপাল, যার ৭৫ শতাংশই এসেছে এভারেস্ট থেকে।

অপরদিকে, পর্বতারোহণের চাপ কমাতে আগামী দুই বছর হিমালয়ের ৯৭টি বিকল্প চূড়ায় বিনামূল্যে আরোহণের সুযোগ পাবেন অভিযাত্রীরা। এসব চূড়ার উচ্চতা পাঁচ হাজার ৯৭০ মিটার থেকে সাত হাজার ১৩২ মিটার পর্যন্ত।

এই চূড়াগুলো নেপালের পশ্চিমাঞ্চলীয় কর্নালী ও সুদূরপশ্চিম প্রদেশে অবস্থিত—যেগুলো দেশের অন্যতম দরিদ্র ও পশ্চাৎপদ অঞ্চল।

পর্যটন বিভাগের পরিচালক হিমাল গৌতম জানান, “অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য থাকা সত্ত্বেও ওই অঞ্চলগুলো পর্যটকদের আকর্ষণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। নতুন নীতিতে সেই চিত্র বদলানোর আশা করছি।”

তবে এসব দুর্গম এলাকায় অবকাঠামো উন্নয়ন বা স্থানীয় জনগণের প্রস্তুতি সম্পর্কে এখনও কিছু জানানো হয়নি।

গত দুই বছরে ওই ৯৭ চূড়ায় মাত্র ৬৮ জন পর্বতারোহী উঠেছেন। অন্যদিকে, শুধু ২০২৪ সালেই এভারেস্ট আরোহণের জন্য ৪২১টি অনুমতিপত্র দেওয়া হয়েছে।

চূড়ান্ত চাপের কারণে পরিবেশগত ক্ষতি ও পর্বতারোহীদের মৃত্যুর ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় বিষয়টি এখন নেপালের আদালত ও সংসদেও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।

২০২৪ সালের এপ্রিলে নেপালের সুপ্রিম কোর্ট সরকারকে এভারেস্টসহ অন্যান্য জনপ্রিয় চূড়ায় অনুমতির সংখ্যা কমিয়ে আনার নির্দেশ দেয়।

সেই সঙ্গে সংসদে একটি প্রস্তাব আলোচিত হচ্ছে, যেখানে বলা হয়েছে—এভারেস্টে উঠতে চাইলে আগে কমপক্ষে সাত হাজার মিটার উচ্চতার নেপালি কোনো চূড়ায় আরোহণের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

কাঠমান্ডু পোস্ট জানিয়েছে, কর্নালী ও সুদূরপশ্চিম অঞ্চলের চূড়াগুলো ভবিষ্যতের অভিযাত্রীদের জন্য ‘উত্তম প্রশিক্ষণ ক্ষেত্র’ হতে পারে।

অর্থসূচক/

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.