রুশ তেল কেনার প্রশ্নে ভারত ‘খানিকটা অবাধ্য’, শুল্ক ইস্যুতে সমঝোতার আভাস

ভারতের কম দামে রুশ তেল কেনার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ বা ট্রেজারিমন্ত্রী স্কট বেসেন্টে মন্তব্য করেছেন, ভারত ‘খানিকটা অবাধ্য’ হয়েছে। তবে তিনি দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ইস্যুতে দীর্ঘদিনের মিত্র এবং কৌশলগত অংশীদার দেশটির সঙ্গে সম্ভাব্য সমঝোতার আভাসও দিয়েছেন, যা আগামী অক্টোবরের মধ্যে হতে পারে।

বুধবার (১৩ আগস্ট) রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার মার্কিন সম্প্রচার গণমাধ্যম ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে স্কট বেসেন্টে বলেন, “সাম্প্রতিক সময়ে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের অনেক বাণিজ্য চুক্তি এবং বৈঠক মুলতবি হয়ে আছে। বিশেষ করে, আমরা ভারতের খানিকটা অবাধ্যতা লক্ষ্য করছি, যা কূটনৈতিক সম্পর্ক এবং আলোচনায় প্রভাব ফেলেছে।”

সম্প্রতি ভারতের উপর অতিরিক্ত রপ্তানি শুল্ক আরোপের ফলে যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারতের মধ্যে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। এই টানাপোড়েনের মূল কারণ রাশিয়ার জ্বালানি তেল। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ রুশ তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য বেঁধে দেয়। এরপর থেকে ভারত কম দামে রাশিয়া থেকে তেল কিনছে এবং বর্তমানে দেশটি রুশ তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা।

এ বিষয়ে ট্রাম্প একাধিকবার অভিযোগ করেছেন, রুশ তেল কেনার মাধ্যমে ভারত রাশিয়াকে যুদ্ধের জন্য অর্থ যোগাচ্ছে। তবে ভারত এর জবাবে বলেছে, “দেশের জনসাধারণকে কম দামে তেল সরবরাহ করাই আমাদের উদ্দেশ্য, এবং সেই জন্যই রাশিয়া থেকে তেল কিনছে।”

ট্রাম্পের সময়ে ভারতীয় পণ্যের ওপর মার্কিন বাজারে ১৫ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক ছিল। তবে ২০ জানুয়ারি ক্ষমতা গ্রহণের পর ট্রাম্প ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন, যা ৭ আগস্ট থেকে কার্যকর হয়। ৬ আগস্ট ভারতীয় পণ্যের ওপর আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করার পর ভারতের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নির্ধারিত শুল্কের পরিমাণ ৫০ শতাংশে পৌঁছায়, যা ভারতের অর্থনীতির জন্য একটি বড় আঘাত।

এই শুল্ক চাপানোর প্রতিক্রিয়ায় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, “ভারত তার জাতীয় স্বার্থে জ্বালানি তেলের দাম স্থিতিশীল রাখার জন্য পদক্ষেপ নিবে এবং জনগণকে ন্যায্য মূল্যে তেল সরবরাহ করবে।”

স্কট বেসেন্টে মঙ্গলবার ফক্স নিউজে বলেন, “আমরা আশা করি, আগামী অক্টোবরের মধ্যে ভারতের সঙ্গে একটি বাণিজ্য সমঝোতায় পৌঁছাতে পারব। এটি হয়তো কিছুটা উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য, তবে আমি মনে করি আমরা ভাল অবস্থানে আছি।”

তিনি আরও জানান, “এবং শুধু ভারত নয়, অক্টোবরের শেষ হওয়ার আগেই আরও কয়েকটি বন্ধু রাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য সমঝোতা হতে পারে।”

অর্থসূচক/

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.