সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট, বারাক ওবামার আনুষ্ঠানিক প্রতিকৃতি হোয়াইট হাউসের প্রবেশপথ থেকে সরিয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ এক স্থানে স্থানান্তর করেছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট, ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই পদক্ষেপকে দুই নেতার মধ্যে দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক টানাপোড়েনের প্রতিফলন হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সোমবার (১১ আগস্ট) সিএনএন এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সাবেক প্রেসিডেন্ট, জর্জ ডব্লিউ বুশ ও তাঁর বাবা জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশের প্রতিকৃতিও একইভাবে অন্য স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সূত্র জানিয়েছে, বারাক ওবামার প্রতিকৃতিটি হোয়াইট হাউসের প্রধান সিঁড়ির এক কোণে ঝুলিয়ে রাখার নির্দেশ দেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। ফলে প্রতিকৃতিটি হোয়াইট হাউসে আগত হাজারো দর্শনার্থীর চোখের আড়ালে চলে যায়।
এমন স্থানে স্থানান্তর করা হয়েছে যেখানে শুধু প্রেসিডেন্টের পরিবার, নির্দিষ্ট কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা সদস্যদের প্রবেশাধিকার রয়েছে। এই অবস্থানে রবার্ট ম্যাকার্ডির আঁকা ঐতিহাসিক প্রতিকৃতি আর সাধারণ দর্শনার্থীদের চোখে পড়বে না।
হোয়াইট হাউসের দীর্ঘদিনের প্রথা অনুযায়ী, সদ্য সাবেক প্রেসিডেন্টদের প্রতিকৃতি হোয়াইট হাউসের প্রবেশপথে এমনভাবে প্রদর্শিত হয় যাতে অতিথি ও দর্শনার্থীরা তা দেখতে পান। কিন্তু ওবামার প্রতিকৃতি সরিয়ে সেই নিয়ম ভঙ্গ করলেন ট্রাম্প।
হোয়াইট হাউসের সৌন্দর্যবর্ধনের প্রায় প্রতিটি কাজে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজেই জড়িত থাকেন বলে জানিয়েছে একাধিক সূত্র।
এছাড়া সাবেক প্রেসিডেন্ট, জো বাইডেনের আনুষ্ঠানিক প্রতিকৃতি এখনো সম্পন্ন হয়নি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের প্রতি তাঁর ‘অসম্মানজনক মনোভাবের’ সর্বশেষ বহিঃপ্রকাশ।
ট্রাম্প সম্প্রতি অভিযোগ করেন, ওবামা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ২০১৬ সালের নির্বাচনের সময় দেশদ্রোহমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন এবং রাশিয়ার হস্তক্ষেপের ইস্যুতে ‘মনগড়া’ গোয়েন্দা তথ্য তৈরি করেছিলেন। ওবামার অফিস এ অভিযোগকে ‘অযৌক্তিক, উদ্ভট ও মনোযোগ সরানোর কৌশল’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। অ্যাটর্নি জেনারেল, পামেলা বন্ডি ইতোমধ্যেই এই অভিযোগের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
এছাড়া প্রয়াত জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশ তাঁর জীবনীতে ট্রাম্পকে ‘ফাঁপা বুলি’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছিলেন এবং ২০১৬ সালের নির্বাচনে হিলারি ক্লিনটনকে ভোট দেন। অন্যদিকে, জর্জ ডব্লিউ বুশকে ট্রাম্প ‘ব্যর্থ ও অনুপ্রেরণাহীন’ প্রেসিডেন্ট বলেও সমালোচনা করেন।
প্রসঙ্গত, প্রেসিডেন্টদের প্রতিকৃতি প্রদর্শনের আধুনিক ঐতিহ্য শুরু হয় ১৯৬০-এর দশকে ফার্স্ট লেডি, জ্যাকুলিন কেনেডির সময় থেকে। তার আগে এই রীতিটি ছিল অনিয়মিত এবং তা নির্ভর করত প্রেসিডেন্টের ব্যক্তিগত ইচ্ছা বা কংগ্রেস ও অন্যান্য উৎস থেকে অর্থায়নের ওপর।
অর্থসূচক/



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.