আর্থিক খাতের সংস্কারে ব্যাংক কোম্পানি আইনকে ব্যাপকভাবে পরিবর্তন করা হচ্ছে।চলতি অর্থবছরে দেশের মূল্যস্ফীতি ৫ শতাংশের নিচে নেমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করছি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
রোববার (১০ আগস্ট) রাজধানীর একটি হোটেলে অন্তবর্তীকালীন সরকারের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
গভর্নর জানান, নতুন বাংলাদেশ ব্যাংক আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, যাতে আর্থিক খাত রাজনীতির ঊর্ধ্বে থাকে এবং কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ বা দুর্বৃত্তায়ন না ঘটে। আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে দায়বদ্ধতা বাড়াতে সংশোধনী অর্ডারও প্রস্তুত হচ্ছে। এছাড়া, ব্যাংক কোম্পানি আইন ১৯৯১ সংশোধনের মাধ্যমে ৫০ শতাংশ স্বাধীন পরিচালক নিয়োগের বিধান আনা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আগামীতে ব্যাংক খাতে দুর্বৃত্তায়ন ঠেকাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্ষমতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। আর্থিক খাতের সংস্কারে ব্যাংক কোম্পানি আইনকে ব্যাপকভাবে পরিবর্তন করা হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, রাজনৈতিক ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকলেই বিনিয়োগ বাড়বে। নির্বাচন সামনে থাকায় বড় বিনিয়োগকারী আসার সম্ভাবনা কম হলেও কিছু বিনিয়োগ পাইপলাইনে রয়েছে।
ড. মনসুর জানান, আর্থিক খাতে কোনো সঙ্কট নেই। বাজারে তারল্য বৃদ্ধি পেলে শেয়ারবাজারও ঘুরে দাঁড়াবে। মূল্যস্ফীতি কমানোর ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। তিনি আরও বলেন, এনবিআর সংস্কারে ভেতরের ‘শত্রু’ দমন করা হয়েছে এবং দ্রুত সংস্কার বাস্তবায়ন জরুরি।
তিনি বলেন, টাকা ছাপানো ও ব্যবস্থাপনায় প্রতি বছর ২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়, যা ক্যাশলেস অর্থনীতি চালু হলে উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে। হাউজিং খাতে বর্তমানে ঋণের পরিমাণ ৪ শতাংশ হলেও তা কমপক্ষে ২০ শতাংশে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
ডিজিটাল আর্থিক সেবা সম্প্রসারণে স্মার্টফোনের দাম ৬-৭ হাজার টাকায় নামিয়ে আনা এবং দ্রুতগতির ইন্টারনেট নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার কথা জানান গভর্নর। ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারের হার বাড়াতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, যদিও বর্তমানে তা ভারতের তুলনায় অনেক কম।
এদিকে অন্তর্বর্তী সরকার আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের মাধ্যমে জনগণের সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের যে ঘোষণা দিয়েছে তাতে সাধুবাদ জানিয়েছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডি।
সংস্থাটি জানায়, ব্যাংক ও আর্থিক খাত সংস্কারে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। রিজার্ভের পতন ঠেকানো গেছে এটা অন্তর্বর্তী সরকারের বড় সাফল্য। তবে এখনো মূল্যস্ফীতি উচ্চ। জনগণকে স্বস্তি দিতে যেখানে কাজ করার সুযোগ রয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের।
অর্থসূচক/



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.