জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ বলেছেন, রাজনৈতিক দল ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শক্রমে শিগগিরই জুলাই সনদের চূড়ান্ত ঘোষণা হবে। কয়েক দিনের মধে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠানো হবে পূর্ণাঙ্গ খসড়া। তাদের মতামত নিয়ে আগামী সপ্তাহে আরেকবার বৈঠক হবে। আশা করি, এটি বাস্তবায়নের সময়সীমা দীর্ঘ মেয়াদি হবে না।
শুক্রবার (৮ আগস্ট) সংসদ ভবনের এলডি হলে জুলাই জাতীয় সনদ প্রনয়ণের অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিতকরণের লক্ষ্যে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
আলী রীয়াজ জানান, গত ২৮ জুলাই পাঠানো সনদের খসড়ার জবাব দিয়েছে দলগুলো। আশা করি, সেই আলোকেই একটি ঐকমত্যে পৌঁছা সম্ভব হবে। প্রতিষ্ঠিত হবে টেকসই গণতন্ত্র।
অনেকে সনদের ভিত্তিতে আগামী জাতীয় নির্বাচনের দাবি করছেন। কমিশন এ নিয়ে কী ভাবছেন এমন প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, নির্বাচন কীভাবে হবে সে বিষয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব আমাদের নয়। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সরকার নির্বাচনের প্রক্রিয়া নির্ধারণ করবে। আমাদের কাজ একটি জাতীয় সনদ করে দেওয়া।
নোট অব ডিসেন্ট নিয়ে যেসব সিদ্ধান্তে ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলোর ভবিষ্যৎ কী– টিআইবির এ সংক্রান্ত পর্যবেক্ষণের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, টিআইবির বিষয়ে আমরা সুনির্দিষ্ট কিছু বলতে পারবো না। তবে এ প্রক্রিয়াকে সামনে রেখে আমরা ঐকমত্যে পৌঁছতে চেয়েছি। বাস্তবায়নের দায়িত্ব আমাদের নয়। তারপরও আমরা আরও আলোচনা করতে চাই।
বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কী না জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিগত ১৪-১৫ বছরে আমাদের নির্বাচন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। তাই এবার সব নাগরিক নির্বাচিত প্রতিনিধি চায়। সবার সম্মিলিত প্রয়াসে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
কমিশনের পরিচালন ব্যয় সম্পর্কে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, আমরা নিজস্ব কোনও ব্যয় করি না। এটি দেখার দায়িত্ব সংসদ সচিবালয়ের। সরকারের পক্ষে নিশ্চয়ই অডিট হবে।
প্রসঙ্গত, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হয় সংবিধান সংশোধনের জন্য। এটির নেতৃত্বে রয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে কমিশনের কার্যক্রম শুরু হয়। এর মধ্যে ৩০ জুলাই প্রথম দফার প্রস্তাবগুলোতে ঐকমত্য হওয়া বিষয়গুলো প্রকাশ করেছে কমিশন। এতে উল্লেখ করা হয় ১৬৬টি প্রস্তাবের মধ্যে ৬২টি বিষয়ে একমত হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো। এর আগে গত ২৮ জুলাই দ্বিতীয় ধাপের খসড়া রাজনৈতিক দলগুলোকে পাঠায় কমিশন। ইতোমধ্যে তারা মতামত দিয়েছেন।
আর দ্বিতীয় ধাপের বৈঠক শেষ হয়েছে গত ৩১ জুলাই। আলী রীয়াজ জানিয়েছিলেন, দ্বিতীয় দফায় এখন পর্যন্ত ২০টি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এর মধ্যে নোট অব ডিসেন্টসহ ১৯টি বিষয়ে একমত হয়েছে দলগুলো।



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.