যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন না করলে সেমিকন্ডাক্টরে ১০০ শতাংশ শুল্ক: ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন না করলে কিংবা ভবিষ্যতে উৎপাদনের পরিকল্পনাও না থাকলে বিদেশি কোম্পানির উৎপাদিত সেমিকন্ডাক্টর আমদানিতে ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে যুক্তরাষ্ট্র।

বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

বুধবার ওভাল অফিসে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, “যেসব কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদনের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে না, তাদের তৈরি সব চিপ ও সেমিকন্ডাক্টরের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে।” তবে যারা ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে কারখানা গড়েছে বা নির্মাণের প্রক্রিয়ায় রয়েছে, তাদের ওপর এই শুল্ক প্রযোজ্য হবে না।

ট্রাম্প আরও বলেন, “যদি কেউ প্রতিশ্রুতি দেয় এবং পরে তা পালন না করে, তাহলে আমরা সেই শুল্ক আদায় করব। তাদের তা দিতেই হবে।” এখনো স্পষ্ট নয়, ঠিক কত ধরনের বা কোন কোন দেশের চিপ এই শুল্কের আওতায় পড়বে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপের লক্ষ্য মূলত চীন। চীনের এসএমআইসি ও হুয়াওয়ের মতো কোম্পানিগুলোর তৈরি চিপ সরাসরি এই শুল্কের আওতায় পড়বে। মার্কিন প্রযুক্তিপণ্যেও ব্যবহৃত এসব চিপ সাধারণত চীনেই তৈরি হয়।

অন্যদিকে, তাইওয়ানের বৃহৎ চিপ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান টিএমএসসি ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে কারখানা স্থাপন করেছে, ফলে এনভিডিয়ার মতো মার্কিন কোম্পানি এই শুল্কের প্রভাব থেকে আংশিকভাবে মুক্ত থাকতে পারে। এনভিডিয়া জানিয়েছে, তারা আগামী চার বছরে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি চিপ ও প্রযুক্তিতে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করবে।

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিভাগ জানায়, বর্তমানে বিশ্বে উৎপাদিত সেমিকন্ডাক্টরের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অংশ মাত্র ১২ শতাংশ, যেখানে ১৯৯০ সালে তা ছিল ৪০ শতাংশ। এ প্রবণতা ঠেকাতেই ২০২২ সালে ৫২.৭ বিলিয়ন ডলারের চিপ ভর্তুকি কর্মসূচি চালু করে দেশটি।

অ্যানেক্স ওয়েলথ ম্যানেজমেন্টের প্রধান অর্থনীতিবিদ ব্রায়ান জ্যাকবসেন বলেন, “যেসব বড় কোম্পানির হাতে প্রচুর নগদ আছে এবং যারা যুক্তরাষ্ট্রে কারখানা গড়তে পারে, তারাই সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী হবে।”

অপরদিকে পিটারসন ইনস্টিটিউটের সিনিয়র ফেলো মার্টিন চোরজেম্পা মনে করেন, শুধুমাত্র সেমিকন্ডাক্টরে এই শুল্ক আরোপ করলে এর প্রভাব সীমিত হতে পারে, যদি চিপযুক্ত যন্ত্রাংশ বা পণ্য এই শুল্কের আওতায় না পড়ে।

এদিকে দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো দেশগুলো ইতিমধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে গাড়ি, সেমিকন্ডাক্টর ও ওষুধসহ অধিকাংশ রপ্তানি পণ্যের ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ একক শুল্ক চুক্তি হয়েছে। একইভাবে দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানও যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে অনুকূল শুল্ক হারের নিশ্চয়তা পেয়েছে।

অর্থসূচক/

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.