ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আসাম রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা সম্প্রতি এক ঘোষণায় জানিয়েছেন, রাজ্যের ‘আদিবাসী’ জনগোষ্ঠীকে অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হবে। এ ঘোষণার পর সীমান্তবর্তী মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলে তীব্র উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি-র এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
আসামের মুখ্যমন্ত্রী শর্মা দাবি করেছেন, ‘‘বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে আদিবাসী জনগণ হামলার শিকার হচ্ছেন, এমনকি নিজেদের গ্রামেও তারা হুমকির মুখে।’’
রাজ্যের মোট জনসংখ্যা প্রায় ৩ কোটি ১০ লাখ। ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী, মুসলিমদের সংখ্যা প্রায় ৩৫ শতাংশ, যাদের অধিকাংশই বাংলা ভাষাভাষী। বাকিরা মূলত হিন্দু ধর্মাবলম্বী ও অসমীয়া ভাষাভাষী।
মুখ্যমন্ত্রী শর্মা একটি নতুন ওয়েবসাইট চালু করার ঘোষণাও দেন, যেখানে সংবেদনশীল অঞ্চলের আদিবাসীরা অস্ত্রের লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
তবে বিরোধীরা এই সিদ্ধান্তকে ‘বিপজ্জনক ও উসকানিমূলক’ বলে উল্লেখ করছেন। কংগ্রেস নেতা গৌরব গগৈ এক্সে (সাবেক টুইটার) লিখেছেন, ‘‘এটি সুশাসন নয় বরং আইনহীনতার পথ তৈরি করবে।’’
বিশ্লেষকদের মতে, আসামের এই পদক্ষেপ বাংলা ভাষাভাষী মুসলমানদের টার্গেট করেই নেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে যাদের পূর্বপুরুষরা শত বছর ধরে আসামে বসবাস করলেও ভাষাগত কারণে তাদের সন্দেহের চোখে দেখা হয়।
২০১৯ সালে আসামেই প্রথম চালু হয় বিতর্কিত জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসি)। এতে প্রায় ২০ লাখ মানুষ নাগরিক তালিকা থেকে বাদ পড়েন, যাদের বেশিরভাগই মুসলিম।
আসামের বিজেপি সরকার ইতোমধ্যেই ‘অবৈধ অনুপ্রবেশকারী’ দমন এবং উচ্ছেদ অভিযানে এগিয়ে এসেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশে রাজনৈতিক পালাবদলের পর আসামের রাজনীতিতে মুসলিমবিরোধী উত্তেজনা আরও বেড়েছে।
অর্থসূচক/



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.