কাশ্মির ইস্যুতে লেখালেখির ওপর আরও কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত সরকার। কাশ্মির নিয়ে লেখা ২৫টি বই নিষিদ্ধ করেছে নয়াদিল্লি। নিষিদ্ধ ঘোষিত বইগুলোর মধ্যে বুকার পুরস্কারজয়ী লেখক অরুন্ধতী রায়ের বইও রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে টিআরটি ওয়ার্ল্ড।
বলা হয়েছে, বুধবার জম্মু ও কাশ্মিরের দিল্লি-শাসিত স্বরাষ্ট্র দপ্তর ২৫টি বই নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। এসব বইকে ‘সন্ত্রাসবাদকে গৌরবান্বিত’ ও ‘ভারতের বিরুদ্ধে বিচ্ছিন্নতাবাদে উসকানিমূলক’ বলে অভিযুক্ত করা হয়।
নিষিদ্ধ বইয়ের তালিকায় রয়েছে— অরুন্ধতী রায়ের আজাদি, এজি নূরানির দ্য কাশ্মির ডিসপিউট ১৯৪৭-২০১২, ভিক্টোরিয়া স্কোফিল্ডের কাশ্মির ইন কনফ্লিক্ট, ক্রিস্টোফার স্নেডেনের ইন্ডিপেন্ডেন্ট কাশ্মির, এবং আরও লেখকের বই যেমন সুমন্ত্র বোস, হাফসা কানজোয়াল, অনুরাধা ভাসিন, পঙ্কজ মিশ্র, হ্যালি ডুশিনস্কি প্রমুখ।
ভারতীয় কর্তৃপক্ষের দাবি, এসব বই ‘অভিযোগ ও ভুক্তভোগীদের সংস্কৃতির আড়ালে’ সন্ত্রাসবাদীদের বীর করে তোলার চেষ্টা করে, সেনাবাহিনীকে অপমান করে এবং ভারতের অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি সৃষ্টি করে।
নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে ২০২৩ সালের ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা আইনের ৯৮ নম্বর ধারা অনুযায়ী।
এই সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় লেখক হাফসা কানজোয়াল বলেন, কাশ্মিরের দখলদার ইতিহাসে তথ্য নিয়ন্ত্রণ নতুন কিছু নয়। তার বই Colonizing Kashmir: State-Building under Indian Occupation-ও নিষিদ্ধ হয়েছে।
অন্যদিকে The Untold Story of Kashmir After Article 370-এর লেখক অনুরাধা ভাসিন বলেন, “সব বই গবেষণালব্ধ, কোনো বই সন্ত্রাসবাদকে গৌরবান্বিত করে না।”
গত ফেব্রুয়ারিতে শ্রীনগরের বইয়ের দোকানগুলো থেকে ৬৬৮টি বই জব্দ করা হয়, যেগুলোর বেশিরভাগই ছিল আবুল আ’লা মওদুদীর লেখা।
বিশ্লেষকদের মতে, এই ধরনের পদক্ষেপ কাশ্মিরের ইতিহাস ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিকল্প বয়ান দমন করার অংশ।
উল্লেখ্য, কাশ্মির নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের বিরোধ দীর্ঘদিনের। ১৯৮৯ সাল থেকে ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে সশস্ত্র প্রতিরোধ চলছে। অনেক কাশ্মিরি এটি বৈধ স্বাধীনতা আন্দোলন হিসেবে দেখে, যদিও ভারত তা সন্ত্রাসবাদ হিসেবে দেখে।
জাতিসংঘ একাধিকবার গণভোট আহ্বান জানালেও তা আজও বাস্তবায়িত হয়নি। এই সংঘাতে এ পর্যন্ত লাখো মানুষের মৃত্যু ঘটেছে, যার মধ্যে রয়েছে বেসামরিক, যোদ্ধা ও সেনাসদস্য।
অর্থসূচক/



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.