ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে ‘ফিলিস্তিনি পেলে’ ওবেইদ নিহত

ফিলিস্তিন জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক খেলোয়াড় সুলেমান আল-ওবেইদ বুধবার গাজায় ইসরাইলি দখলদার বাহিনির গুলিতে নিহত হয়েছেন। অবরুদ্ধ করে রাখা অঞ্চলটির মেডিকেল বিভাগের সূত্র তার মৃত্যুর বিষয়টি জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে জানানো হয়, বুধবার (৬ আগস্ট) রাফাহ অঞ্চলে মানবিক সহায়তার অপেক্ষায় থাকা অবস্থায় ওবেইদকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় দখলদার বাহিনী। এ হত্যাকাণ্ড ইসরাইলের চলমান গণহত্যার আরেকটি করুণ উদাহরণ, যা গাজায় প্রায় ২২ মাস ধরে বেসামরিক জনগণের ওপর চালিয়ে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক মহলের নীরবতা এ পরিস্থিতিকে আরও উদ্বেগজনক করে তুলেছে।

সুলেমান আল-ওবেইদ গাজার কাব শাবাব আল-শাতি ক্লাব থেকে ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু করেন। এরপর তিনি অধিকৃত পশ্চিম তীরের প্রিমিয়ার লিগ ক্লাব আল-আমারিতে খেলেন। ‘ফিলিস্তিনের পেলে’ নামে খ্যাত ওবেইদকে গাজায় জন্ম নেয়া অন্যতম সেরা ফুটবল প্রতিভা হিসেবে বিবেচনা করা হত। ২০১৬ ও ২০১৭ সালে তিনি গাজার সর্বোচ্চ গোলদাতা নির্বাচিত হন। ২০২৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত তিনি পেশাদার ফুটবলে সক্রিয় ছিলেন।

আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও ছিল তার অবদান। ২০১০ সালের ওয়েস্ট এশিয়ান ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে ইয়েমেনের বিপক্ষে ফিলিস্তিনের হয়ে প্রথম আন্তর্জাতিক গোল করেন তিনি। এরপর ২০১২ সালের এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপ বাছাই পর্ব এবং ২০১৪ সালের ফিফা বিশ্বকাপ বাছাই পর্বেও জাতীয় দলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন।

সুলেমান ওবেইদ একমাত্র ক্রীড়াবিদ নন, যিনি চলমান দমন-পীড়নের শিকার হয়েছেন। শুধুমাত্র গত মাসেই ৩৯ জন ক্রীড়াবিদ, স্কাউট ও তরুণ নেতাকে হত্যা করেছে ইসরাইলি বাহিনী। সংঘাত শুরুর পর থেকে ফিলিস্তিনের ক্রীড়া ও যুব সমাজে নিহতের সংখ্যা ৬৬০ ছাড়িয়েছে।

সুলেমান ওবেইদের মৃত্যুর খবরে বিশ্বব্যাপী প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও ফ্রান্সের কিংবদন্তি ফুটবলার এরিক ক্যান্টনা ইনস্টাগ্রামে এক পোস্টে ক্ষোভ প্রকাশ করে লেখেন, ‘আর কতদূর পর্যন্ত আমরা এই গণহত্যা চলতে দেব?’ একই সঙ্গে তিনি মুক্ত ফিলিস্তিনের প্রত্যাশাও ব্যক্ত করেন।

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.