মিয়ানমারে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার, নির্বাচনের ঘোষণা

দীর্ঘমেয়াদি জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করে চলতি বছরের ডিসেম্বরে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা। তবে ডিসেম্বরের কত তারিখে নির্বাচন সে বিষয়ে কিছু জানায়নি। কিন্তু অভ্যুত্থানে উৎখাত হওয়া সাবেক সংসদ সদস্যসহ বিরোধী দলগুলো ইতিমধ্যেই এই নির্বাচন বয়কটের ঘোষণা দিয়েছে।

নাইপিদোতে জান্তার প্রশাসনিক কাউন্সিলের এক সম্মাননা অনুষ্ঠানে মিন অং হ্লাইং বলেন, আমরা ইতিমধ্যেই প্রথম অধ্যায় অতিক্রম করেছি। এখন আমরা দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু করছি। আগামী নির্বাচন ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হবে এবং সব যোগ্য ভোটার যাতে ভোট দিতে পারে তা নিশ্চিত করতে প্রচেষ্টা চালানো হবে।

যদিও জান্তা এখনো নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করেনি। তবে ইতিমধ্যে রাজনৈতিক দলগুলো নিবন্ধিত হচ্ছে এবং ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার সংক্রান্ত প্রশিক্ষণও শুরু হয়েছে।

মিয়ানমারে সর্বশেষ নির্বাচন হয়েছিল ২০২০ সালের নভেম্বরে। সেই নির্বাচনে ভোট কারচুপি হয়েছিল- অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ১ নভেম্বর অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লেইং এ অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, ক্ষমতা দখলের পর সামরিক সরকারের প্রধানও হন তিনি।

সেনা অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয় মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সুচি’র নেতৃত্বাধীন এনএলডি সরকার; গ্রেপ্তার হন সুচি, তার দলের এমপি-মন্ত্রী এবং এনএলডির বিভিন্ন স্তরের কয়েক হাজার নেতাকর্মী। এখনও কারাগারে আছেন তারা। গত বছর এনএলডির নিবন্ধনও বাতিল করা হয়েছে। ফলে আসন্ন নির্বাচনে এনএলডি দল হিসেবে অংশ নিতে পারছে না। তবে এই নির্বাচনে জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লেইং প্রার্থী হিসেবে দাঁড়াবেন কি না— তা নিয়ে ধোঁয়াশা থেকে গেছে।

জান্তার মুখপাত্র জাও মিন তুন সাংবাদিকদের পাঠানো এক ভয়েস বার্তায় জানান, একাধিক দলের গণতান্ত্রিক পথে দেশকে এগিয়ে নিতে আজ জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করা হয়েছে। খবর দ্য গার্ডিয়ানের

বিশ্লেষকদের মতে, নির্বাচন শেষে মিন অং হ্লাইং হয়তো রাষ্ট্রপতি অথবা সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান হিসেবে ক্ষমতা ধরে রাখবেন, ফলে তার কার্যত শাসন অব্যাহত থাকবে।

 

 

  
    

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.