জলবায়ু পরিবর্তনে আবাসস্থল সংকুচিত হওয়া, চোরা শিকারিদের দৌরাত্ম্য, খাদ্যসংকট ও কার্যকর টেকসই পদক্ষেপের অভাবে সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার রয়েছে অস্তিত্বসংকটে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত দুই দশকে সুন্দরবনে বাঘের টিকে থাকার লড়াইটা আরও কঠিন করে তুলেছে।
এমন পরিস্থিতিতে আজ (২৯ জুলাই) বিশ্বজুড়ে আন্তর্জাতিক ব্যাঘ্র দিবস বা বিশ্ব বাঘ দিবস পালিত হচ্ছে।
“বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি, সুন্দরবনের সমৃদ্ধি”—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বন অধিদপ্তরের আয়োজনে পালিত হচ্ছে এই দিবসটি। বাঘ সংরক্ষণ ও এর আবাসস্থল রক্ষায় জনসচেতনতা তৈরির উদ্দেশ্যে প্রতি বছর এই দিনটি পালিত হয়। ২০১০ সালে রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গে আয়োজিত আন্তর্জাতিক বাঘ সম্মেলনে দিবসটির সূচনা হয়।
সর্বশেষ ২০২৪ সালের বাঘ জরিপ অনুযায়ী, দেশে বাঘের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২৫-এ। আগের জরিপে, ২০১৫ সালে, এ সংখ্যা ছিল ১০৬টি।
বিশ্ব বাঘ দিবস-২০২৫ উপলক্ষে রাজধানীর বন ভবনের হৈমন্তি মিলনায়তনে আজ আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। সভাপতিত্ব করবেন প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী। অনুষ্ঠানে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা অংশ নেবেন।
বন বিভাগ সূত্র জানায়, ২০০৪ সালে এক জরিপে ২১টি বাঘ শাবকসহ মোট ৪৪০টি বাঘ থাকার তথ্য পাওয়া যায়। ২০০৯ সালে সেই সংখ্যা দাঁড়ায় ৪০০-৪৫০টি। এরপর ২০১৩-১৫ সালে ক্যামেরা ট্র্যাপিং পদ্ধতিতে করা জরিপে সংখ্যাটি কমে ১০৬-এ দাঁড়ায়।
পরবর্তী জরিপে, ২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ২২৯ দিনে ১৬৫৯ কিলোমিটার এলাকায় ২৪৯টি স্থানে স্থাপিত ৪৯১টি ক্যামেরা ব্যবহার করে ১১৪টি বাঘের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়।
সবশেষ জরিপটি ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত চলে। এতে সুন্দরবনের ৬০৫টি গ্রিডে মোট ১২১০টি ক্যামেরা ৩১৮ দিন ধরে স্থাপন করে ১০ লাখের বেশি ছবি ও ভিডিও সংগ্রহ করা হয়। সেখান থেকে ৭২৯৭টি বাঘের ছবি পাওয়া যায়। ভারত, নিউজিল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষজ্ঞ দলের বিশ্লেষণের ভিত্তিতে বাঘের এই চূড়ান্ত সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়। জরিপ কার্যক্রমে ব্যয় হয় প্রায় ৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা।



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.