বিশ্বের দুই বৃহৎ অর্থনৈতিক শক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মধ্যে চলমান বাণিজ্যিক অচলাবস্থার অবসান ঘটেছে। মাসব্যাপী উত্তেজনার পর অবশেষে শুল্ক ইস্যুতে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে দুই পক্ষ। এর মধ্য দিয়ে ইইউ’র সকল পণ্যের ওপর ১৫ শতাংশ শুল্ক আরোপে একমত হয়েছে ওয়াশিংটন ও ব্রাসেলস।
রোববার (২৭ জুলাই) স্কটল্যান্ডে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন দের লেয়েনের মধ্যে বৈঠকে এই চুক্তি চূড়ান্ত হয়। খবর বিবিসির।
এর আগে ট্রাম্প ইইউ পণ্যের ওপর ৩০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন। তবে আলোচনার মাধ্যমে সেই অবস্থান থেকে সরে এসে তিনি বলেন, “এই চুক্তি আমাদের আরও ঘনিষ্ঠ করবে, এবং এটি সবার জন্য ভালো।”
ভন দের লেয়েন চুক্তির প্রশংসা করে বলেন, “কঠিন আলোচনার পর আমরা একটি বড় অর্জন করেছি। এটি দুই অংশীদারের মধ্যে বাণিজ্যে স্থিতিশীলতা আনবে।” তিনি জানান, ইউরোপ আগামী তিন বছরে যুক্তরাষ্ট্রে ৬০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে, যার মধ্যে জ্বালানি খাতে খরচ হবে ৭০০ বিলিয়নেরও বেশি।
চুক্তির আওতায় কিছু নির্দিষ্ট পণ্যের—যেমন কিছু রাসায়নিক, কৃষিপণ্য, এয়ারক্রাফট ও খুচরা যন্ত্রাংশের ওপর শুল্ক ছাড় দেওয়া হলেও স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামে ৫০ শতাংশ শুল্ক বহাল থাকবে।
ট্রাম্প এই চুক্তিকে ‘ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য চুক্তি’ হিসেবে উল্লেখ করেন। ইইউর জন্য এটি বড় ধাক্কা না হয়ে বরং একটি রফাদানিতে পরিণত হলো বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। ১০ শতাংশের বেশি শুল্ক আরোপ না হওয়ায় ইইউ খানিকটা স্বস্তিতে থাকলেও, যুক্তরাষ্ট্র ৯০ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত শুল্ক আদায় করতে পারবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ভবিষ্যতে এই চুক্তি ইউরোপের ওপর রাশিয়ার জ্বালানিনির্ভরতা কমিয়ে দেবে বলেও মন্তব্য করেন ভন দের লেয়েন।
এদিকে ইউরোপের কয়েকটি দেশ এই চুক্তিকে সতর্কভাবে স্বাগত জানিয়েছে। আয়ারল্যান্ড বলছে, উচ্চ হারে শুল্ক বাণিজ্যকে ব্যয়বহুল করে তুলবে। জার্মান চ্যান্সেলর এক্স-এ লিখেছেন, বাণিজ্য সংঘাত তাদের জন্য বিপর্যয়কর হতে পারত।
ট্রাম্প বর্তমানে স্কটল্যান্ড সফরে আছেন এবং সোমবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন। তিনি মঙ্গলবার অ্যাবারডিনে যাবেন, যেখানে তার পরিবারের আরেকটি গলফ কোর্স রয়েছে, যা আগামী মাসে উদ্বোধন হবে।
অর্থসূচক/



মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.